জাতীয় নারী ক্রিকেট দল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সম্মান এনে দিল। ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে নিয়েছে বাংলার বাঘিনীরা।
দেশের পুরুষ ক্রিকেট দলও এর আগে কখনই তিন বা তার অধিক দেশের অংশগ্রহণে কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা এনে দিতে পারেনি। মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে বাঘিনীরাই আজ দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দেশকে এশিয়ার সেরার মর্যাদা এনে দিল।
কুয়ালালামপুরে টসে জিতে মেয়েদের এশিয়া কাপ ফাইনালে বোলিংটা ভালোই হয়েছে বাংলাদেশের। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ জিতে ইতিহাস গড়তে সালমাদের করতে হবে ১১৩। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১২ রানে থেমেছে ভারত।
বোলিংয়ে নেমে চতুর্থ ওভারেই ভারতীয় ওপেনার স্মৃতি মন্দনাকে (৭) রানআউট করেন সালমা। ভারতের রানের চাকাও শুরুতে ভালোই আটকে রাখে বাংলাদেশ। প্রথম ৫ ওভারের মধ্যে ২৩টি বল ‘ডট’ দিয়েছে বোলারেরা। রান তোলার চাপে পড়ে সপ্তম ওভারে দীপ্তি শর্মাকেও (৪) হারায় ভারত। তাঁকে সরাসরি বোল্ড করেন জাহানারা। ভারতের স্কোর তখন ৬.৪ ওভারে ২ উইকেটে ২৬। এখান থেকে ৬ রানের ব্যবধানে ভারতের আরও ২টি উইকেট তুলে নিয়েছে মেয়েরা। সাত, আট ও নয়—এই তিন ওভারে ৩ উইকেট হারায় ভারত। দীপ্তি ফিরে যাওয়ার পরের ওভারেই ওপেনার মিতালি রাজকে (১১) তুলে নেন খাদিজা। নবম ওভারে আনজুয়া পাতিল (৩) আউট হয়েছেন নিজের কৃতকর্মের মাশুল গোনে। ৮.২ ওভারে রান নিতে গিয়ে নিজের প্রান্তে ফেরার সময় উইকেটরক্ষকের থ্রো দেখে তিনি উইকেট ঢেকে দৌড়ান। সালমারা ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউটের আবেদন করলে টেলিভিশন রিপ্লে দেখে আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার। ১৩তম ওভারে ভেদা কৃঞ্চমূর্তিকেও তুলে নেন অধিনায়ক সালমা। তাঁকে বোল্ড আউট করেন এই স্পিনার।
১৫তম ওভারে একাই ২ উইকেট তুলে নেন রুমানা আহমেদ। দ্বিতীয় বলে তাঁকে ডাউন দ্য উইকেট এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তানিয়া ভাটিয়া (৩)। তিন বল পর শিখা পাণ্ডেকে (১) শামীমা সুলতানার ক্যাচে পরিণত করেন রুমানা। খাদিজার করা শেষ ওভারের প্রথম বলে রানআউটের শিকার হন ভারতের পেসার ঝুলন গোস্বামী। সতীর্থরা এক প্রান্তে তেমন ভালো করতে না পারলেও দলের ইনিংসটা বলতে গেলে একাই টেনেছেন ভারতের অধিনায়ক হারমনপ্রীত কাউর। ৪১ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল খাদিজা ও রুমানা। দুজনেই ২টি করে উইকেট নেন। তবে ভারতের রানের চাকা আটকে রাখায় দারুণ অবদান রেখেছেন নাহিদা আক্তার ও সালমা খাতুন। ১ উইকেট নেওয়া সালমা ১৩টি ‘ডট’ দিয়েছেন। নাহিদা উইকেট না পেলেও ১৬টি ‘ডট’ দিয়েছেন।
ভারতের দেয়া ১১২ রানের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ। ওপেনার শামীমা সুলতানা এবং আয়শা রহমান স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান যোগ করে অপরাজিত থাকেন এ ওপেনিং জুটি।
পুনম যাদব ব্রেকথ্রু এনে দেন। ২৩ বলে ১৭ রানে আউট হয় আয়শা রহমান। পরের বলেই আবার আঘাত হানেন পুনম। শামীমা সুলতানাকে ১৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। দলীয় ৫৫ রানে ফারজানা হক পুনমের তৃতীয় শিকারে পরিণত হলে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর নিগার সুলতানার ৩০ রানের উপর ভর করে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬ ওভারে ৮৫ রান। ৪টি উইকেটই যায় পুনম যাদবের ঝুলিতে।