বাংলাদেশে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে কিছু লোক পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর দুদিন আগেই নিখোঁজ হয়েছিলেন মন্ত্রণালয়ের আরো একজন কর্মচারী।
এছাড়া জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে আলোচিত লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিককেও কে বা কারা উঠিয়ে নিয়ে গেছে বলে থানায় জিডি হয়েছে। পুলিশ বলছে, এসব অভিযোগগুলো তদন্ত করছেন তারা।
একজন মানবাধিকার কর্মী বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে অপহৃত কয়েকজনের ফিরে আসার পর যে স্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছিলো – তার মধ্যে নতুন করে এসব ঘটনা উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করছে।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো: মোতালেব হোসেন ঢাকার বসিলায় তার বহুতলবিশিষ্ট নির্মাণাধীন বাড়ির কাজের তদারকি করছিলেন শনিবার বিকেলে।
সেখানেই কয়েকজন ব্যক্তি মাইক্রোবাস যোগে দিয়ে তার সাথে কথা বলেন এবং পুলিশ পরিচয়ে তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান বলে জানান তার ভাই তোফায়েল হোসেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ রয়েছেন ওই একই মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মচারী নাসির উদ্দিন। আরেকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার বাসায় একদল ব্যক্তি গিয়ে তার খোঁজ করে এসেছেন।
আবার জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে বহুল আলোচিত লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিনকেও প্রায় একইভাবে তুলে নেয়ার অভিযোগে থানায় জিডি হয়েছে গত রাতেই।
পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেলী ফেরদৌস বলছেন অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ ঘটনাগুলো নিয়ে তদন্তে নেমেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্নফাঁস সহ নানা বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশেরও অভিযোগ আসছিলো নানা মহল থেকে। এসব নিয়ে তদন্তের কথাও বলা হচ্ছিলো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। আবার জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা ও ধর্মীয় উগ্রবাদে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগে গত নভেম্বরে লেক হেড গ্রামার স্কুল বন্ধ করে দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পরে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ করে স্কুলটি চালুর নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলছেন দীর্ঘদিন গুম থাকার পর সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনীতিক সহ কয়েকজন ফিরে আসার যে স্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছিলো তার মধ্যে গত কয়েকদিনের ঘটনা নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছে।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আজকের এক সভায় কর্মচারীদের নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে যাতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ নিজেও।
সভার পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন বিষয়টি নিয়ে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপির সাথে কথা বলেছেন এবং তারা মন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে তারা জানার চেষ্টা করছেন যে কারা এটা ঘটিয়েছে।