কনস্টেবল পদে আসছে ১০ হাজার পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

0
bangladesh police বাংলাদেশ পুলিশ 2

করোনার কারণে এক বছর বন্ধ থাকার পর চলতি জুনেই আসতে পারে ১০ হাজার কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। এবার নতুন করে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশ পুলিশের সবশেষ হিসাবে মোট লোকবল আছে ২ লাখ ১২ হাজার। যার মধ্যে কনস্টেবলের সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ৮২৯ জন।

কনস্টেবল পদে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ড ছিল ন্যূনতম জিপিএ-২.৫ সহ এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। তবে এবার ন্যূনতম যোগ্যতা এইচএসসি করা হতে পারে। এ ছাড়া শারীরিক যোগ্যতায় এ বছর পরিবর্তন আসতে পারে। এত দিন পুরুষদের কনস্টেবল হওয়ার জন্য উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও নারীদের জন্য ৫ ফুট ২ ইঞ্চি ছিল। এবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নারীদের উচ্চতার মানদণ্ড ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি করা হতে পারে। তবে বয়সসীমায় কোন পরিবর্তন আসছে না। আগের মতোই ১৮ থেকে ২০ বছর রাখা হবে।

নতুন নিয়োগের বিষয়ে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ চলছে। এ মাসেই আসতে পারে বিজ্ঞপ্তি।

কতজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে কনস্টেবল নিয়োগের একটা সংখ্যা প্রকাশ করেছে। যতগুলো শূন্য পদ আছে, তার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। কতজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

২০১৯ সালে সবশেষ কনস্টেবল পদে নিয়োগ হয়। ২০২০ সালের শেষের দিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনাসহ নানা জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়।

যেভাবে হবে নিয়োগ
পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে থেকে কোনো আবেদন করতে হয় না। আগ্রহীদের নির্ধারিত সময় ও স্থানে উপস্থিত থেকে প্রথমে শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা দিতে হয়। এই ধাপে যাদের বাছাই করা হয়, কেবল তারাই চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন। পরবর্তীতে তাদের ৪০ নম্বরের একটি লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এই পরীক্ষার সময় থাকে দেড় ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন থাকে।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রার্থীদের ২০ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এই প্রতিটি ধাপ পার করে আসার পরেই একজন প্রার্থী প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত হন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত পুনঃ বাছাই কমিটি তথ্যাদি যাচাইয়ের পর তারা চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত হন। তারা প্রথমে নির্ধারিত প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) হিসেবে ৬ মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন। এরপরে তাদের চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা
সাধারণভাবে একজন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল জাতীয় বেতন ২০১৫ অনুযায়ী ৯ হাজার টাকা স্কেলে বেতন পান। এ ছাড়া শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে শেষ করার পর চাকরি স্থায়ী হলে বিনা মূল্যে পোশাকসামগ্রী, ঝুঁকি ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা, রেশন সামগ্রী পেয়ে থাকেন।

তবে আসন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বেতনের বিষয়ে নতুন কোন ঘোষণা আসতে পারে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

পুলিশের মতো লোভনীয় চাকরিতে এমন বড় নিয়োগের ঘোষণা নিয়ে এখনই সাবধান হওয়া উচিত বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুলিশে নিয়োগ সব সময় দুর্নীতির বড় আখড়া। গত দুয়েকবছরে দেখেছি টাকা নিয়ে নিয়োগের বিষয় নিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করেছে বাহিনী। কিন্তু অনেক জেলাতে স্থানীয় রাজনীতিক নেতারা প্রভাব খাঁটিয়ে নিয়োগ দেওয়ান। প্রার্থীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধাও নেন তারা। এবার সব অনিয়ম বন্ধ করে দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ হবে আশা করছি।