২০১৫ সালে কোপা আমেরিকার শতবর্ষী আসরের পর জাতীয় দলকে বিদায়ই বলে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের অনুরোধে ফিরে আসেন সেই অবসর ভেঙে। বলতে গেলে একাই আর্জেন্টিনাকে তুলেছেন বিশ্বকাপে। কিন্তু বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আরেকটা হৃদয়ভাঙা হার। এবার আর্জেন্টিনারই কেউ কেউ অবসর চাইছেন মেসির। এবার মেসি অবশ্য বলছেন অন্য কথা। বলে দিয়েছেন, বিশ্বকাপ না জিতে অবসরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই নেই তাঁর।
গত বৃহস্পতিবার নোভগোরাদে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর কথা বলার মতো মনের অবস্থা ছিল না মেসির। দলের সঙ্গে নীরবের মাঠ ছেড়ে গেছেন।
সবাই যখন বিশ্বকাপ থেকে আর্জেন্টিনার ছিটকে পড়ার শঙ্কার কথা বলছেন, ঠিক সেই সময়ে মুখ খুলেছেন মেসি। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচের আগে যেন অভয় দিলেন আর্জেন্টিনা সমর্থকদের, ‘বিশ্বকাপ জয় আমার কাছে অনেক কিছু। কারণ আর্জেন্টিনার জন্য বিশ্বকাপটা বিশেষ একটা ব্যাপার। আসলে আমার কাছেও এটা বিশেষ।’
মেসির সঙ্গী একটা অভিযোগ সেই কবে থেকেই-মেসি যতটা বার্সেলোনার, ততটা আর্জেন্টিনার নন! বার্সেলোনার জার্সিতে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন মেসি। ক্লাব ফুটবলে ব্যক্তিগত অর্জনের ডালাটাও কানায় কানায় পূর্ণ তাঁর। অথচ আর্জেন্টিনার হয়ে অলিম্পিক ফুটবলের সোনা জয় ছাড়া আর কিছুই নেই সময়ের অন্যতম সেরা তারকার। কখনো কখনো তো আর্জেন্টাইনরা দেশের প্রতি মেসির ভালোবাসা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে ছাড়েন না!
একটা বিশ্বকাপ জিততে মেসি কতটা মরিয়া তা স্পষ্ট হয় তাঁর বলা কথায়, ‘বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার স্বপ্ন আমি সব সময়ই দেখে এসেছি। বিশ্বকাপ জেতার পর যে আনন্দের অনুভূতি হয়, সেটাও দেখেছি। ওই মুহূর্তটি নিয়ে ভেবে আমার মাথার চুল পর্যন্ত সোজা হয়ে যায়। আমি বিশ্বের লাখ লাখ আর্জেন্টাইনকে আনন্দে ভরিয়ে দিতে চাই। আমি এই স্বপ্নটা বিসর্জন দিতে পারি না।’
অন্যদিকে আর্জেন্টিনার মানুষ কিনা এই মেসিরই অবসর চাইছেন! কিন্তু মেসি যে তাঁর স্বপ্ন পূরণ না করে জাতীয় দলকে বিদায় বলবেন না! কোনো রাখঢাক না রেখেই বলে দিয়েছেন, ‘আমি প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ শিরোপাই জিতেছি। কিন্তু শেষটাতে এসে আমি একটু উচ্চাভিলাষী। দেশের হয়ে বিশ্বকাপ না জিতে আমি ফুটবল থেকে অবসর নেব না।’