ভারতের কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী জোটকে আরও শাক্তিশালী করতে এবার দেশটির জাতীয় কংগ্রেস নেত্রী ও ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি। বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে দিল্লির ১০ নম্বর জনপথে সোনিয়ার বাসভবনে গিয়ে সোনিয়ার সাথে দেখা করেন মমতা। সেখানে দুই নেত্রী প্রায় বিশ মিনিট ধরে কথা বলেন।
বৈঠক শেষে মমতা সাংবাদিকদের জানান ‘আমি যখনই দিল্লিতে আসি, তাঁর সাথে দেখা করি। আমাদের দুই জনের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভাল। আজ আমি তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিয়েছি এবং সোনিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আমি তাঁকে বলেছি যে, দেশ চায় ২০১৯ সালের নির্বাচনে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ লড়াই হোক। রাজনৈতিক দলগুলোর যে রাজ্যে যার শক্তি বেশি সেখানে তারাই লড়াই করুক’।
মমতা আরও জানান ‘আমরা চাই আঞ্চলিক দলগুলোর ফ্রন্টকে কংগ্রেস সহায়তা করুক, আমরা সেই বিষয়টি নিয়েও কথা বলেছি। সেক্ষেত্রে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীকে দিয়ে লড়াইয়ে এগোতে হবে। তবে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে উৎখাত করা সম্ভব’। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন ‘গণতন্ত্রকে হত্যা করতে বিজেপি অত্যাচার চালাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া বিজেপি আর কিছুই করছে না’।
এদিন সোনিয়ার সাথে দেখা করার আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল’ এর সাথেও দেখা করেন মমতা। প্রায় আধা ঘন্টা বৈঠক হয় দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। বিজেপির তিন নেতা যশবন্ত সিনহা, শত্রুঘ্ন সিনহা, অরুণ শৌরির সাথেও কথা হয় মমতার। প্রত্যেকেই মমতার দিল্লির বাসভবনে এসে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পরই অটল বিহার বাজপেয়ীর শাসনকালে বিজেপির তৎকালীন মন্ত্রী অরুণ শৌরি জানান, প্রতিটি রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জি যে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ লড়াই করার প্রস্তাব দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে লড়াই করার সেটাই সঠিক পথ।
আগামী বছর লোকসভার নির্বাচনের আগে অ-বিজেপি রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে যে তৃতীয় ফ্রন্টের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেখানে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছেন মমতা। আর সেই কারণেই চার দিনের সফরে দিল্লি রয়েছেন মমতা।
মঙ্গলবারই নাশ্যনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), শিবসেনা, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে), সমাজবাদী পার্টি (এসপি), তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)-এর শীর্ষ নেতাদের সাথে দেখা করে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে এক ছাতার তলায় আনার বিষয়ে কথা বলেন। তবে সোনিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঐ দিন সোনিয়ার সাথে দেখা হয়নি মমতার।