এক ম্যাচ বসে থাকার ক্ষতিটা সুদে-আসলে উশুল করলেন। ফিরেই করলেন চার গোল। ফ্রেঞ্চ লিগে দিজোঁকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে পিএসজি। এমন রাতের পর নেইমারকে স্তুতির বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু সেই প্রশংসার গুড়ে বালি ঢেলে দিচ্ছে এক বিতর্ক। নেইমারের স্বার্থপরতায় দুয়ো দিয়েছে খোদ পিএসজির গ্যালারি। খবর ফক্সস্পোর্টস, স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড, মেট্রো, ব্লিচার রিপোর্ট, গোলডটকমের।
মৌসুমের শুরুর দিকে এডিনসন কাভানির সঙ্গে লেগে গিয়েছিল নেইমারের। স্পট কিকের দায়িত্ব কে নেবেন, এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়ে উঠেছিল প্রকাশ্য। নেইমারকে সেই দায়িত্ব এককভাবে তুলে দিয়েছেন কোচ উনাই এমেরি। ধীরে ধীরে কাভানিও মেনে নিতে শুরু করেছেন আসল বস নেইমারই। কাল নেইমার বসের জায়গা থেকেও সৌজন্যটা দেখাতে পারতেন। কিন্তু এর বদলে আচরণ করেছেন স্বার্থপরের মতো। এটাই জন্ম দিয়েছে বিতর্কের।
নেইমারের হ্যাটট্রিক, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার জোড়া গোল, কাভানি ও এমবাপ্পের একটি করে গোলে ৭-০-তে এগিয়ে ছিল পিএসজি। তখন পেনাল্টি পায় প্যারিসের ক্লাবটি। গ্যালারিতে থেকে কাভানির নামে স্লোগান ওঠে। ততক্ষণে সবাই জেনে গেছে, পিএসজির ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ১৫৬ গোলের রেকর্ড ধরে ফেলেছেন কাভানি। আর এক গোল করলে গড়বেন নতুন ইতিহাস।
নেইমারের হ্যাটট্রিক যেহেতু হয়েই গেছে, অনেকেই ভেবেছিল, পেনাল্টিটা এবার হয়তো কাভানিকেই নিতে দেবেন। কিন্তু নেইমার এসব আবেগের ধারে-কাছেও যাননি। নিজেই পেনাল্টি নিয়েছেন। লিগে করেছেন ১৫তম গোল। উরুগুয়ের স্ট্রাইকার ২১ গোল করে সবার ওপরে। নেইমার হয়তো দ্রুত সেই ব্যবধান কমিয়ে আনতে চান।
কিন্তু ফুটবল দলীয় খেলা। নেইমারের এই অসৌজন্যতা যে হজম করতে কষ্ট হচ্ছিল, সেটা কাভানির শুকনো মুখে অভিবাদন জানানোতেই পরিষ্কার। এমনকি গ্যালারি থেকে এ সময় সিটি বাজিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করে দর্শকও। চার গোল করে, দুটি গোল করিয়েও এদিন নেইমার সবার মন জিততে পারলেন না! হয়তো বড় মনের পরিচয় দিতে পারেননি বলেই।
দর্শকদের এই আচরণ হয়তো নেইমারও মানতে পারেননি। শেষ বাঁশি বাজার পর মাথা দোলাতে দোলাতে বের হয়েছেন। এমনিতেই রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে ব্যাংক ভেঙে নিয়ে যেতে তৈরি বলে খবর। এর মধ্যে এই ঘটনা!
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা অবশ্য দাবি করেছেন, এমন নয় নেইমার অসন্তুষ্ট। এমন নয়, সমর্থকদের সবাই তাঁর বিরুদ্ধে। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না ও যখন মাঠ ছাড়ছিল, যখন রাগান্বিত ছিল। সমর্থকদের একটা অংশ ওর বিরুদ্ধে ছিল ঠিকই, কিন্তু সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, চূড়ান্ত ফলাফল আর আমাদের জয়। আর এডি (কাভানি) তো একসময় রেকর্ডটা করবেই। ও তো সব সময়ই গোল পায়। এই বছরে ওর রেকর্ডটা ভাঙার জন্য যথেষ্ট সময় পড়ে আছে।’