আমাদের কাছে কিশোয়ারই বাংলাদেশ

0
কিশোয়ার চৌধুরী

তানভীর শাহরিয়ার রিমন

ইউরোপ-আমেরিকার যত বাংলাদেশী রেঁস্তোরা আছে প্রায় সব গুলো ইন্ডিয়ান রেঁস্তোরা নামে পরিচিত । এত এত বাংলাদেশী মালিকের রেঁস্তোরা কিন্তু খুব একটা সাইনবোর্ড পাবেননা যেখানে লিখা আছে বাংলাদেশী কুইজিন ! এটা আমাদেরই দোষ । আমাদের মাছ-টমেটো ভর্তা যে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হতে পারে সেটা আমরা ভাবতেই পারিনাই ।

আমরা পরের ধনে পোদ্দারী করছি, মানে ইন্ডিয়ান কুইজিন বিক্রী করছি । বড় করে রেঁস্তোরার বাইরে সাইনবোর্ড ঝুলাইছি আশা রেস্টুরেন্ট-ইন্ডিয়ান কুইজিন !
আসলে কথা গুলো বলছি, মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিযোগী কিশোয়ার চৌধুরীর দারুণ অর্জনে ।

প্রতিযোগিতায় শুরু থেকে তিনি একের পর এক পরিবেশন করেছেন আমাদের ঐতিহ্যের খাবার । কখনো মাছ আর কাঁচা আমের রেসিপি, তো কখনোবা রান্না করেছেন টমেটো এবং পুদিনা পাতা দিয়ে পাস্তা । টমেটো দিয়ে মাছের ঝোল, শিমের ভর্তা আর জিরা ভাত, গলদা চিংড়ি ভাজা, বিটরুট সবজি, শসা দিয়ে মাছ ভাজা, ফুচকা, চটপটি, সমুসা, দম-আলু আর তেঁতুল চাটনি, রেঁধেছেন খিচুড়ি, বেগুন ভর্তা আর নিরামিষ ভোজ, খাসির রেজালা আর ঘিয়ে ভাজা পরোটা, নেহারি এবং পান্তা-‘ইলিশ’ আর আলুভর্তার মতো বাঙালি খাবার। প্রতিবারই খাবারগুলো বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার সেটি উল্লেখ্য করেছেন কিশোয়ার !
যদিও কিশোয়ার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন, তবু আমাদের কাছে তিনিই চ্যাম্পিয়ন । আমাদের কাছে কিশোয়ারই বাংলাদেশ । তিনি এই দেশে না জন্মেও যতটা বাংলাদেশকে ধারণ করেছেন, ভালোবেসেছেন, আমরা এই মাটি ও বাতাসে বেড়ে উঠে ততটা কী ধারণ করতে পেরেছি ?
কিশোয়ার এর জন্য টুপি খোলা সালাম । ইউরোপ, আমেরিকার সব বাংলাদেশী রেঁস্তোরা মালিকরা এবার ভাবুন, কবে থেকে বাংলাদেশী কুইজিন চালু করবেন । বড় করে সাইনবোর্ডে ঝুলবে বাংলাদেশী কুইজিন !