আদালত অবমাননার অভিযোগে এনজিও প্রতিষ্ঠান প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুক আহমেদকে একমাসের দেওয়ানি কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের এই রায়ের ফলে কাজী ফারুককে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং পরে কারাভোগের সব খরচ তার নিজেকেই বহন করতে হবে।
মামলা সংক্রান্ত এক রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একক বেঞ্চ ড. কাজী ফারুককে একমাসের দেওয়ানি কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে আদালতের রায় অনুসারে ড. কাজী ফারুককে ১৫ দিনের মধ্যে প্রশিকার বর্তমান চেয়ারম্যান ও গভর্নিং বডির কাছে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আদালতকে অবহিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রশিকার বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম এ ওয়াদুদ ও সিইও মো. সিরাজুল ইসলামের পক্ষের আইনজীবী মো. সোলায়মান মামলার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানান, হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে কাজী ফারুককে প্রশিকার বর্তমান চেয়ারম্যানের কাছে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। এ কাজ সম্পন্ন করার পর তাকে এফিডেবিটের মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, আত্মসমর্পণের পর নিয়ম অনুসারে হাইকোর্ট তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেবেন। তার দেওয়ানি কারাদণ্ড হওয়ায় কারাগারে থাকাবস্থায় তার থাকা-খাওয়ার সব ব্যয় শুধুমাত্র তাকেই (কাজী ফারুককে) বহন করতে হবে।
এর আগে ২০০৯ সালে ২৪মে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী ফারুককে অপসারণ করা হলে তিনি বিচারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং তাকে অপসারণের আদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদন আদালত খারিজ করে দেন।
ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে তিনি জজ আদালতে আপিল দায়ের করেন। কিন্তু সেই আপিলও খারিজ হওয়ায় তিনি হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। সেই রিভিশন আবেদনের রায়ে সাবেক চেয়ারম্যান কাজী ফারুককে প্রশিকার বর্তমান চেয়ারম্যান ও গভর্নিং বডির কাছে অফিস বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশনা পালন না করে ২০১২ সালে সন্ত্রাসী নিয়ে প্রশিকা অফিসে হামলা চালান এবং অফিস দখল করে রাখেন কাজী ফারুক। পরে এ বিষয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টকে অবহিত করা হলে আদালত রুল জারি করেন।
ওই রুলে কাজী ফারুককে কেন দেওয়ানি কারাগারে আটক রাখা হবে না এবং কেন তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই রুলের শুনানি শেষে আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে প্রশিকার বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম এ ওয়াদুদ ও সিইও মো. সিরাজুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. সোলায়মান। অন্যদিকে, প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী ফারুকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দীনসহ প্রমুখ।