
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে পাঁচদিন যাবৎ চলা তাপদাহে প্রায় পাঁচশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রেকর্ড করা তাপমাত্রা বয়স্কসহ দুর্বল মানুষদের জন্য মারাত্মক অবস্থা তৈরি করছে।
ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যের প্রধান মৃতদেহ পরীক্ষক লিসা লাপোয়িন্তে জানান, গত শুক্রবার থেকে শুরু করে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ৪৮৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাঁর মতে এই হিসাব প্রাথমিক। হয়ত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। খবর আল জাজিরার।
‘হিট ডোম’ এর প্রভাবে কানাডার স্মরণকালের ইতিহাসে রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার লিটন এলাকায় রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা মাপা হয়েছে ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ফলে ৮৪ বছর পুরনো সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে গেছে। কানাডার পাশাপাশি তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও। বায়ুমণ্ডলে সাগরের উষ্ণ বায়ু আটকা পড়ার ফলশ্রুতিতে যে উচ্চ চাপ তৈরি হয় তাকে হিট ডোম বলা হয়।
কানাডার কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত প্রত্যেক পাঁচ দিনে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু তাপপ্রবাহের কারণে তা ১৯৫ শতাংশ বাড়তি দেখা গেছে। এ ব্যাপারে লিসা লাপোয়িন্তে বলেন, গত পাঁচ দিনে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় অভাবনীয় সংখ্যক মৃত্যুর কথা জানা গেছে। এর মধ্যে কী পরিমাণ তাপপ্রবাহের কারণে মারা গেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে ধারণা করা হচ্ছে উল্লেখযোগ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাপপ্রবাহের কারণে।
বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার মধ্যাঞ্চলের শহর লাইটনে এই সপ্তাহে তিনবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার এই রাজ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছায় ৪৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
মেট্রো ভ্যানকুভার জানায় শুক্রবার তাপপ্রবাহ শুরুর পর কর্মকর্তারা অন্তত ৬৫টি আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। বৃহত্তর ভ্যানকুভার এলাকার বার্নাবি এবং সারে শহরেও বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। মৃতদের অনেকেই বয়স্ক ব্যক্তি।
ইনভায়রনমেন্ট কানাডা জনসাধারণকে ঘরে থাকতে আর প্রচুর পানি পান করার পরামর্শ প্রদান দিয়েছে। পাশাপাশি পরিবারের বয়স্কদের নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।