গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে আটক চিত্রনায়িকা পরীমণিকে। শুক্রবার রাত ৭টার দিকে তাকে প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে আনা হয়।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, নতুন আসা সব বন্দিদের কোয়ারেন্টিনে রাখার সেন্টার রজনীগন্ধা ভবনে পরীমণিকে রাখা হয়েছে। করোনাকালীন নিয়ম অনুসারে পরীমণিকে কারাগারের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ১৫ দিন রাখা হবে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব-মহিলা কারাগার) মো. আব্দুল জলিল জানান, ‘কোভিডের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী নতুন বন্দিদের ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। ৭ দিন পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। আপাতত পরীমণিকেও ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন নির্দেশনা পেলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। ’
মো. আব্দুল জলিল নিশ্চিত করেছেন, কোয়ারেন্টিন শেষ করার পর পরীমণি ডিভিশন পাবেন। অভিনেত্রীর অন্যতম আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভীর এক আবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত তাকে ডিভিশন দেওয়ার আদেশ প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে পরীমনিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।
অপরদিকে, তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ পরীমনির জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপরদিকে, পরীমনিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা। আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, “মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আসামি শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমনিকে কারাগারে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি পলাতক হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।”
আবেদনে আরও বলা হয়, “রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বিষয়ে আসামি (পরীমনি) বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মামলার অভিযোগের সঙ্গে তার জড়িত থাকার ব্যাপারে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটকে রাখা একান্ত প্রয়োজন।”
গত ১০ আগস্ট দুপুরে চারদিনের রিমান্ড শেষে নায়িকা পরীমনিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।