গনধর্ষণের শাস্তি সামান্য কিছু টাকা জরিমানা , আর কান ধরে উঠবস করিয়ে মীমাংসা

0
গনধর্ষণ

নোয়াখালীর সেনবাগে ১২ বছর বয়সের সন্তানের সামনেই এক নারীকে দলবেঁধে গনধর্ষণের ঘটনায় বিচারের নামে স্থানীয় সালিশে অভিযুক্তদের ‘সামান্য কিছু টাকা জরিমানা আর কান ধরে উঠবস করিয়ে মীমাংসার ঘটনায় পুর এলাকাজুড়েই চলছে উত্তেজনা। স্থানীয় মাতব্বরেরা এমন ‘প্রহসনের’ রায় দেবার পর ঘটনার শিকার ঐ নারীর অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
গনধর্ষণ
সেনবাগ থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরী তিনজনকে গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, এ ঘটনায় সোমবার পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে । আটককৃতরা হলেন মো. রুবেল (২০), নূর নবী (২৪) ও আবুল কাশেম ওরফে মাছ কাশেম (৫০)।

ঘটনার শিকার ঐ নারীর অভিযোগপত্র ও পুলিশি সুত্রে জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে স্বামী মারা গেলে তিনি চট্টগ্রামে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। তাদের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে (১২) চট্টগ্রামে তার সঙ্গে আর দেড় বছর বয়সী ছোট ছেলে বাড়িতে তার মায়ের সঙ্গে থাকে।

“গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিকালে বড় ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হই। রাত ১০টার দিকে ছাতারপাইয়া বাজারে থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য সেলিম নামে একজনের রিকশা নেন তিনি। এরপর কিছুদূর যাওয়ার পর চালক রিকশা থামিয়ে বেশ কিছুক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বলেন। এ সময় নূর নবী ও রুবেল সেখানে হাজির হয়ে তাকে টেনে-হিঁছড়ে সড়ক থেকে একটু দূরে খাল পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

এ সময় তার ছেলে কান্নাকাটি করলে তাকে ছোরার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রাখে বলেও অভিযোগ করেছেন ওই নারী। অভিযোগসুত্রমতে, এরপর স্থানীয় আবুল কাশেম ও মো. হানিফ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সালিশ বৈঠক করেন। সালিশে ধর্ষণের ঘটনায় নূর নবী ও রুবেল উপস্থিত থাকলেও সেলিম হাজির হননি।

“পরে মো. হানিফ, রুবেল ও নবীর ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার এবং সেলিমের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আবুল কাশেম নামে স্থানীয় মাতবর। সেই সঙ্গে সালিশে উপস্থিত রুবেল ও নূর নবীকে ১০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

এ প্রসঙ্গে সেনবাগ থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরী  জানান, দুপুরে পুলিশের একটি দল বিধবাকে মামলার জন্য থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মামলা করার পর জড়িত থাকার অভিযোগে নূর নবী, রুবেল ও আবুল কাশেমকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ধর্ষণ ও সালিশে ঘটনায় জড়িত বাকিরা পালিয়ে গেছে বলে জানান ওসি।