ভয়াবহ ট্রাক বোমা বিস্ফোরণে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৬ জনে। আহত ৩ শ’র-ও বেশি।
পুলিশ এবং হাসপাতালের দাবি, আফ্রিকার ইতিহাসে এটিই ভয়াবহতম জঙ্গি হামলা। এ ঘটনায় তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আবদুল্লাহি মহম্মদ।
গত শনিবার মোগাদিসুর ব্যস্ত রাস্তায় ট্রাকে রাখা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে নিহতদের মধ্যে অনেকেরই দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ফলে তাঁদের শনাক্ত করাও সম্ভব হচ্ছে না। কর্মকর্তাদের মতে, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বিবিসি সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের জেরে একটি হোটেল ভেঙে পড়ে। বহু বিদেশি অতিথি মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এখনো আটকে রয়েছেন অনেকেই। তাদের বের করে আনতে চলছে উদ্ধার কাজ।
ইসলামিক সন্ত্রাস ও বিভিন্ন ‘ওয়ার লর্ড’দের মধ্যে সংঘর্ষে রক্তাক্ত সোমালিয়া। পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে ২০০৭ সালে ইসলামিক দেশ ও শরিয়ত আইন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে আফ্রিকার দেশটিতে ‘জিহাদ’ ঘোষণা করে আল-শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠী। মোগাদিসু হামলার নেপথ্যেও এই জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আবদুল্লাহি মহম্মদ। নিরীহদের ওপর এমন ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট মোতাবেক, সোমালিয়ায় প্রায় ৯-১০ হাজার আল-শাবাব জঙ্গি রয়েছে। ২০০৬ সালে ‘ইউনিয়ন অফ ইসলামিক কোর্ট’ নামের ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত থেকে মোগাদিসু ছিনিয়ে নেয় ইথিওপিয়ার সেনা। তারপরই আত্মপ্রকাশ করে আল-শাবাব। তারা বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারি বাহিনীর হাতে নাস্তানাবুদ হচ্ছিল। তাই এক প্রকার মরিয়া হয়েই এ হামালা চালিয়েছে আল-শাবাব, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এই ভয়ানক হামলার পর সোমালিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও তুরস্কসহ একাধিক দেশ। এই বিস্ফোরণে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ওয়াশিংটন।