বিশ্বকাপের একুশতম আসর চলছে রাশিয়ায়। তবে বিশ্ব ফুটবলাঙ্গনের মনোযোগের অনেকখানি পড়ে আছে থাইল্যান্ডেও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে গুহায় আটকা পড়েছে ওয়াইল্ড বোয়ার নামের খুদে ফুটবলারদের একটি দল। এই দলে আছে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী ১২ জন কিশোর এবং তাদের কোচ। তারা তেরোজন গত ২৩ জুন ঘুরতে গিয়ে উত্তরাঞ্চলীয় চিয়াং রাই এলাকার লুয়াং গুহায় ঢুকে আর বের হতে পারেনি। নয় দিন পর তাদের সুস্থ থাকার খবর নিশ্চিত হলেও এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো আশা প্রকাশ করেছেন, শিগগিরই নিরাপদে উদ্ধার হয়ে তারা ১৫ জুলাই বিশ্বকাপের ফাইনাল মাঠে বসে দেখতে পারবেন। এ ছাড়া আটকে পড়া দলটির সুস্থতা ও উদ্ধারের বিষয়ে শুভ কামনা জানিয়েছেন বিশ্ব ফুটবলাঙ্গনের খেলোয়াড়, কোচ, টিম এবং ফুটবল সংস্থাগুলো।
এক চিঠিতে থাইল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে পাঠানো ফিফা সভাপতি লিখেছেন, ‘আশা করি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তারা যদি পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারেন, তাদের শারীরিক অবস্থাও যদি ভ্রমণের অনুকূলে হয়, তাহলে ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে ফিফা তাদের আনন্দের সঙ্গে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি তারা আমাদের সঙ্গে ফাইনাল দেখতে পারবেন। যা নিঃসন্দেহে একটি আলাপন ও উদযাপনের দারুণ মুহূর্ত হবে।’
ইনফান্তিনো আশা করলেও বাস্তবতা অবশ্য ভিন্ন। কিশোর ফুটবলারের দলটি গুহায় ঢোকার পর ভারি বর্ষণ ও কাদায় এর প্রবেশমুখ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ গুহার ভেতরেও পানি এবং কাদার কারণে বিভিন্ন জায়গায় চলাচলের পথ সংকুচিত অথবা বন্ধ হয়ে গেছে। প্রযুক্তির সাহায্যে অবস্থান নির্ণয়ের পর এরই মধ্যে তাদের কাছে খাবার ও বেঁচে থাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে।
এইদিকে উদ্ধার প্রক্রিয়ায় থাকা থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনী মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, উদ্ধার করতে কয়েক সপ্তাহ এমনকি কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে। নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন আনন্দ সুরাবন বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে চার মাস চলার মতো খাবার পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ এই কিশোরদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা জানান ফিফা সভাপতি। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খেলোয়াড়, কোচ এবং ফেডারেশনগুলোও।
এ বিষয়ে ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার জন স্টোনস বলেন, ‘ওদের কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। খারাপ লাগছে তারা এমন একটা জায়গায় আটকে পড়েছে বলে। তবে আমরা আশাবাদী, তারা দ্রুতই নিরাপদে বের হয়ে আসতে পারবে।’ একই আশাবাদ রেখে ব্রাজিল কিংবদন্তি রোনালদো তার এক টুইট বার্তায় কিশোর দলটির দুর্দশাকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে অভিহিত করে লেখেন, ‘ফুটবল বিশ্ব আশা করে কেউ একজন এই কিশোরদের বের করে আনার পথ খুঁজে পাবেন।’ লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ এক ভিডিও বার্তায় আটকে পড়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘শক্ত থাকো। মনে করো আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি।’ এ ছাড়া জাপানের বিশ্বকাপ স্কোয়াড এবং ক্রোয়েশিয়া ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও থাই কিশোরদের দ্রুত ও নিরাপদ উদ্ধারের আশা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।