উত্তর নাইজেরিয়ার বোকো হারামের জঙ্গিরা এক নারীর ভয়ে থরথর করে কাঁপে৷ কারণ, এই নারী বেছে বেছে জঙ্গিদের শিকার করেন৷ সুঠাম চেহারার আয়েশার বন্দুকের নলে অনেক জঙ্গির ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছে৷ সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার বিশেষ অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে জঙ্গি শিকারি আয়েশার জীবন৷
নাইজেরিয়ার সামবাইসা অরণ্য৷ এই এলাকা হাতের তালুর মতোই চেনেন আয়েশা বাকারি গোম্বি৷ সশস্ত্র এই নারী তার বাকি সঙ্গিদের নিয়ে জঙ্গলে-জঙ্গলে, দুর্গম এলাকায় জঙ্গি শিকারে মেতে আছেন৷ তার ভয়ে ভীত বোকো হারাম৷ যাদের হামলায় বারে বারে রক্তাক্ত হচ্ছে নাইজেরিয়া দেশটি৷
বোকো হারাম জঙ্গি সংগঠনটি ২০০২ সাল থেকে তাণ্ডব শুরু করেছে৷ সামবাইসা অরণ্যেই তাদের প্রধান ঘাঁটি৷ সেখান থেকেই লাগাতার উত্তর নাইজেরিয়ার একাধিক স্থানে হামলা চালায় জঙ্গিরা৷ আর সেই হামলার জবাব দিতে জঙ্গলে ঢুকে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে আয়েশা ও তার দলের সদস্যরা৷ জঙ্গি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ওই এলাকায়৷
আয়েশা এক বিশেষ অভিযানের সদস্যা৷ তার দলটি বোকো হারামের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে৷ বিশেষ করে জঙ্গিদের হাতে অপহৃত শিশু কন্যাদের রক্ষায়৷ পাশাপাশি যেকোন রকম নাশকতার বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘর্ষে নেমে পড়েছেন আয়েশা৷ উত্তর নাইজেরিয়ার এক প্রত্যন্ত গ্রামে সংসার আয়েশার৷ স্বামী আছেন৷ তিনিও জঙ্গি বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত৷ আয়েশার জীবন আর পাঁচজন নাইজেরীয় নারীর মতোই৷ গ্রামে ও পরিবারে তিনি বেশ শান্ত স্বভাবের একজন গৃহবধূ৷ আয়েশার লড়াইয়ের খবর প্রকাশ হতেই চমকে গিয়েছে ব্শ্বি৷ তার জীবনযাত্রায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন অনেকে৷ যেভাবে বোকো হারামের মতো জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে বন্দুক হাতে লড়াই করছেন এই নারী, তাকে সালাম করছে বিশ্ব৷
সামবাইসা অরণ্যের গভীর থেকে গভীরে ছুটে যায় জঙ্গি শিকারী আয়েশার বাইক৷ তবে তিনি সবসময় বাইক চালান না৷ পিছনে বসে থাকেন৷ আর তার বন্দুক থাকে শিকারের লক্ষ্যে৷ গরম, ঠাণ্ডা, প্রবল বৃষ্টি কোন সময়েই দায়িত্ব থেকে সরে আসেন না আয়েশা ও তার সঙ্গীরা৷ এই সংগঠনের কথা ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত৷ প্রবল শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক অস্ত্রে বলীয়ান বোকো হারাম জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নাইজেরিয়া ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো একযোগে সেনা অভিযান চালাচ্ছে৷ তারই মাঝে নিজের চেষ্টায় আয়েশা লড়াই করছেন৷ জঙ্গি হত্যা অভিযানে তার ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ আয়েশা চান জঙ্গি মুক্ত হোক পৃথিবী৷ কলকাতা টুয়েন্টিফোর।