ঘটনাটা সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে এসেছিল দুই বছর আগে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মডেল ও স্কুলশিক্ষিকা ক্যাথরিন মায়োরগাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তা তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। কিন্তু মায়োরগা এত সহজেই ছাড়ছেন না জুভেন্টাস তারকাকে। নতুন খবর, ধর্ষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৬৫ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৬৫ কোটি টাকা) দাবি করেছেন ৩৭ বছর বয়সী মায়োরগা।
পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হয়েছিলেন মায়োরগা। জার্মান পত্রিকা ‘ডার স্পেইগেলের’ বিস্ফোরক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মায়োরগার আইনজীবী লেসলি স্টোভালে জানিয়েছেন ২০০৯ সালে জুনে লাস ভেগাসের এক হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন মায়োরগা।
স্টোভালে আরও জানিয়েছিলেন রোনালদো ও মায়োরগা নাকি মৌখিকভাবেই ব্যাপারটা চুকিয়ে ফেলেছিলেন। স্টোভালের দাবি, ব্যাপারটা নিয়ে মায়োরগা যেন কখনো মুখ না খোলেন, তা নিশ্চিত করতে তাঁকে তখন ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার দিয়েছিলেন রোনালদো। জার্মান সংবাদমাধ্যমটির অনলাইনে এক ভিডিও বার্তায় স্টোভাল বলেছিলেন, ‘২০০৯ সালে জুনে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নামের এক ব্যক্তির দ্বারা সে ধর্ষণের শিকার হয়।’
রোনালদো বরাবরই অভিযোগটি অস্বীকার করে এসেছেন। দুই বছর আগে জুলাইয়ে লাস ভেগাসের এক কৌঁসুলি জানিয়েছিলেন, এই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি। রোনালদোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হচ্ছে না। কিন্তু এ নিয়ে আদালতের প্রকাশিত নতুন নথিপত্র দেখে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মিরর’ জানিয়েছে, মায়োরগা সেই ঘটনায় ‘অতীত ও ভবিষ্যৎ হয়রানি এবং যন্ত্রণা’র ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪১.৫ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছেন। এর পাশাপাশি ‘দণ্ডমূলক ক্ষতিপূরণ’ হিসেবে আরও ২০.৫ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছেন মায়োরগা।
২০১০ সালে মায়োরগা প্রথমবারের মতো রোনালদোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিয়েছিলেন বোঝাপড়ার মূল্য হিসেবে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পর। কিন্তু তিন বছর আগে লাস ভেগাসে সেই একই ঘটনায় দেওয়ানি মামলা করেন মায়োরগা। তিনি তখন বলেছিলেন, রোনালদোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেননি আর এ নিয়ে দুই পক্ষের বোঝাপড়ার ওই সময়টা তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। সেই ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তখনো। আর তাই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো মানসিক অবস্থা তাঁর ছিল না।
কিন্তু ২০১৮ সালে রোনালদো সব অভিযোগ অস্বীকার করে টুইট করেন, ‘ধর্ষণ হিসেবে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে, সেসব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এসব ঘৃণ্য অপরাধ আমার বিশ্বাসের সঙ্গে যায় না। এসব (অভিযোগ) থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে মুখিয়ে আছি। কেউ আমাকে ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমে নিজের কার্যসিদ্ধি করবে, তা হয় না।’ যদিও ‘মিরর’ জানিয়েছে, মায়োরগার আইনি দল সেই ঘটনায় কমপক্ষে ৬০ জন সাক্ষীর নাম লিপিবদ্ধ করেছে। তাঁদের মধ্যে আছেন রোনালদোর এজেন্ট হোর্হে মেন্দেজ ও জুভেন্টাস সভাপতি আন্দ্রেয়া আনেয়েল্লি।
জুভেন্টাসে বছরে ৩০ মিলিয়ন ইউরো বেতন পাওয়া রোনালদো ইনস্টাগ্রামেও এই অভিযোগের বিরুদ্ধে সুর চড়া করেছিলেন। ২০১৮ সালে এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘না, না, না, না। ওরা আজ কী বলেছে? মিথ্যা বলেছে। পুরোপুরি মিথ্যা। ওরা আমার নামটা ব্যবহার করতে চাচ্ছে। এটাই স্বাভাবিক। ওরা আমার নামটা ব্যবহার করে বিখ্যাত হতে চাচ্ছে।’ রোনালদোর সঙ্গে দেখা হওয়ার সময় মডেলিংয়ে জড়িত ছিলেন মায়োরগা। লাস ভেগাসের পাম ক্যাসিনো রিসোর্টে রোনালদোর কামরায় ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন তিনি।