নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে সফরকারী দলগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন সংগ্রহের লজ্জা এখন পাকিস্তানের

0
নিউজিল্যান্ড

কলিন মানরোকে পুল করেছিলেন হাসান আলী। বুলেটগতিতে ছুটতে থাকা বলটি কেন উইলিয়ামসনের তালুবন্দী হতেই পাকিস্তানকে চেপে ধরে শঙ্কা। ওয়ানডের ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোরের লজ্জা পেতে হবে না তো! নিউজিল্যান্ডের ২৫৭ রানের জবাবে পাকিস্তানের সংগ্রহ যে তখন ৮ উইকেটে ৩২!
নিউজিল্যান্ড
শেষ পর্যন্ত তা না হলেও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে সফরকারী দলগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন সংগ্রহের লজ্জা এখন পাকিস্তানের। সরফরাজ আহমেদের দল অলআউট হয়েছে মাত্র ৭৪ রানে। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এটি যুগ্মভাবে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। যেখানে ‘সান্ত্বনা’ বলতে নিউজিল্যান্ড দলটার বিপক্ষে পাত্তা না পেলেও তাঁদের অধিনায়ক উইলয়ামসনের (৭৩) ব্যক্তিগত সংগ্রহকে অন্তত টপকাতে পেরেছে গোটা পাকিস্তান দল!

সেটিও সম্ভব হতো না যদি সরফরাজ-রুম্মান মিলে দশম উইকেটে না গড়তেন সর্বোচ্চ রানের জুটি (২২)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রানের জুটি নবম উইকেটে। কিন্তু তার আগের চিত্রটা ভয়াবহ! টপ অর্ডারে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউ-ই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ট্রেন্ট বোল্ট মাত্র পাঁচ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট নিয়ে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের টপ অর্ডার। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, গত জুনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যে দলটার সামনে কেউ দাঁড়াতে পারেনি, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সেই দলটাই কিনা স্রেফ শুয়ে পড়েছে!

প্রথম দুই ওয়ানডে হারের পর পাকিস্তানের জন্য এ ম্যাচটা ছিল সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। কিন্তু সেই লড়াইয়ে ১৮৩ রানের হারটা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তান দলের দৈন্যকে ফুটিয়ে তুলল আরও বেশি করে—নিউজিল্যান্ডে ১৩টি সিরিজের মধ্যে এটি হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের দশম সিরিজ হার। শুধু তা–ই নয়, ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এটা পাকিস্তানের টানা নবম হার! যা কিনা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসে যেকোনো দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টানা বাজে পারফরম্যান্সের নজির।
সত্যি বলতে, বোল্টের সুইং আর মুভমেন্টের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তানের টপ অর্ডার। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সেরা পরিসংখ্যান (৭.২-১-১৭-৫) এখন তাঁর।

আর এই সিরিজে পাকিস্তানের টপ অর্ডারের অবস্থা যেনতেনই! তিন ম্যাচ শেষে তাদের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের রান গড় ১৭.১০—যেটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ন্যূনতম ২০ ইনিংস–বিচারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজে পারফরম্যান্স।
রুম্মান রইস কিন্তু এ সুযোগটা নিতে পারেন। ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে রানে (১৬) তিনি যে সতীর্থদের ছাপিয়ে গেছেন! তাঁর এই ১৬ রান ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে কোনো দলের সর্বোচ্চ স্কোরারদের মধ্যে আবার সর্বনিম্ন—১৯৮৩ সালে ভারতের বিপক্ষে ৩৭ রান নিয়ে তালিকাটির শীর্ষে ‘বিগ বার্ড’ জোয়েল গার্নার।

নিউজিল্যান্ডের এই দুর্দান্ত জয়ে কিন্তু মধুর প্রতিশোধের সুবাসও আছে। ১৯৯০ সালে শারজায় এই পাকিস্তানের বিপক্ষেই ৭৪ রানে অলআউট হয়েছিল নিউজিল্যান্ড, যেটা তাঁদের ওয়ানডে ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। ২৮ বছর পর ডানেডিনে সেই পাকিস্তানকে তাঁরা অলআউট করেছে একই রানে, যেটি আবার পাকিস্তানের ওয়ানডে ইতিহাসেও যুগ্মভাবে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর—‘মধুর প্রতিশোধ’ বুঝি একেই বলে!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে