পরীমনির অপরাধ এখনও প্রমাণিত হয়নি: ওমর সানি

0

পরীমনি ইস্যুতে এবার মুখ খুললেন চিত্রনায়ক ওমর সানি। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই বিষয়ে বিশাল একটি পোস্ট শেয়ার করেন তিনি। সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় এই নায়ক। নিউজ ইনসাইড পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো সেটি।
আইন বলে, যতক্ষণ পর্যন্ত অপরাধ প্রমাণ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি কেবল অপরাধের জন্য অভিযুক্ত; দোষী নয়। কিন্তু পরীমনিকে গ্রেফতারের পর থেকে আমরা কি দেখলাম? চলচ্চিত্র থেকেই তাকে বের করে দেয়া হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে তাকে অপরাধী প্রমাণ হবার আগে আমরা শাস্তি দিয়ে দিলাম। বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে, বিনোদন জগৎ সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মনকে বিষিয়ে দেওয়া হলো না? এর আগেও তো একজন নামী অভিনেতা, প্রযোজক জেল খেটেছেন। কই তাঁর বেলায় তো এই নিয়ম ছিল না। যাই হোক এবার মূল কথায় আসি। পরীমণির বাড়ি থেকে যে পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে, তা দেখে প্রশ্ন জাগে এই পরিমাণ বোতল তো পরীমণি বাড়ির পাশের মুদির দোকান থেকে কেনেনি বা নিজে বাড়িতে তৈরি করেনি।
তাহলে এই মাদকদ্রব্যের সরবরাহ কোথা থেকে হলো, কার কাছ থেকে এগুলো কিনলো বা সংগ্রহ করলো। মূল রাঘব বোয়ালদের আগে ধরতে হবে। তারা সব সময়ই আড়ালে থেকে যায়। আমি জানি না পরীমণি মূল অপরাধী কি-না।  তবে চলচ্চিত্রের একজন শিল্পী হিসেবে বুঝি মুম্বাইয়ের চিত্রজগতে যা ঘটেছিল, এক প্রভাবশালী ধনী ব্যবসায়ী এক সুন্দরী নায়িকাকে তার লালসার শিকার করতে না পেরে তার বন্ধু একজনের সহায়তায় তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে যেভাবে তার জীবন ও ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছিল, ঢাকায় পরীমণির ক্ষেত্রে সেই ষড়যন্ত্রের যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীও সেই কথাটা বলেছেন একটা লেখায়। বরং রিহ্যাবে দিয়ে তাকে সুস্থ করার দায়িত্বও এই সমাজের। তাকে ভুল শোধরানোর সময় দিতে হবে।


রাজধানীতে পরীমনিকে যারা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে লাভবান হয়েছেন, তারা যদি বেইআনীভাবে অর্থ উপার্জন করে থাকেন তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিত। বিশেষ করে পরীর কাছের মানুষদেরও দায় আছে। যারা তার কাছে থেকেও ভালো পরামর্শ দেবার কথা কিন্তু তা না দিয়ে মা, বেবী, মামা, বলে বলে নানা সময় নানা ফায়দা নিয়েছেন। আমি নিজে ধোয়া তুলশি পাতা না। আমিও এক সময় সিগারেটসহ নানা আড্ডায় যেতাম। তবে তা শুধরিয়ে নিয়েছি। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু স্পর্শ করি না এখন। 
আমরা আইন প্রয়োগের বিভিন্ন ধাপ যতবেশি স্বচ্ছ আর আবেগমুক্ত রাখতে পারবো, তত বেশি করে নিশ্চিত করতে পারবো দেশে আইনের শাসন এবং আইনের প্রতি জনগণের আস্থা। একজন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিক হিসেবে, একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে একটি স্বাভাবিক, মর্যাদাপূর্ণ আর নিরাপদ জীবন আমাদের দাবি। এই দাবি পূরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দায়িত্বের অংশটুকু যথাযথভাবে পালন করতে হবে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই পরীমনি এখনো কোটি ভক্তের মনে গেঁথে আছে। একজন অভিনয়শিল্পী। তাঁর ক্যারিয়ার সবে শুরু। তাকে ভুল শোধরানোর সুযোগ দিলে হয়ত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারবে। তাতে চলচ্চিত্রশিল্পও একজন অভিনয়শিল্পীকে হারাবে না । 
**অভিনেতার ফেসবুক থেকে…