কোন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মতদ্বৈততায় বিদেশীদের নাক গলাতে দিলে কী ঘটে তার নির্মম এক নজির সিরিয়া। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে আছে দেশটি।
সাত বছরের গৃহযুদ্ধের পর সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুপার মার্কেট সর্বত্র যে অস্বাভাবিকতা নজর কাড়ছে তাহলো দেশটি প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে নারী-পুরুষের অনুপাত সেখানে এখন ৬৫:৩৫; বেসরকারি সংস্থাগুলোর দাবি এই সমীকরণ প্রায় ৭:১। অর্থাৎ ৭ জন নারীর বিপরীতে সেখানে আছে মাত্র ১ জন পুরুষ!
মিডিল-ইস্ট-আই প্রকাশিত নীচের ছবিগুলো সেই ভয়ানক ভারসাম্যহীন পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অধিকাংশই এখন নারী; টিভি দর্শকদের জমায়েতেও সেই ভারসাম্যহীনতা দেখা গেল। পুরুষদের কেউ নিহত, কেউ আহত, কেউ পলাতক। বাকিরা যুদ্ধের পোশাকে বহু শিবিরে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের মুখোমুখি এখনও। কবরস্থানের পরিসর কেবল বাড়ছেই।
দেশটির নারীদের জন্য এই পরিস্থিতি ভয়ানক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সবাইকে পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে আয়-রোজগারমূলক কাজে নামতে হচ্ছে। যুদ্ধ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়েছে ভয়াবহ। বাড়তি দায় হিসেবে আছে যুদ্ধজনিত নিরাপত্তাহীনতা।
বিশ্বের ছোট-বড় অনেক দেশই তাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্রগুলোর পরীক্ষা চালিয়ে নিয়েছে সিরিয়ায় গত সাত বছরে। কেবল গত বছর ১০ হাজার বেসামরিক মানুষ মানুষকে খুন করা হয়েছে সেখানে। দেশটির নাগরিকরা ঠিক কী অপরাধ করেছিল কার কাছে– তার কোন উত্তর নেই কোথাও।
সিরিয়ার অভিজ্ঞতায় বিশ্বের সকল দেশের রাজনীতিবিদদের জন্যই শিক্ষণীয় অনেক কিছু রয়েছে। কিন্তু আফসোস রাজনীতিবিদরা শিক্ষা না নিয়ে নিজদের ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে থাকে!
লেখকঃ আলতাফ পারভেজ
(লেখকের ফেসবুক পোস্ট থেকে)