ভারত সম্পর্কে অবস্থান বদলাতে পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খুররম দস্তগীর খানের মতে, আমেরিকার সঙ্গে সব বিষয়ে ‘খোলাখুলি’ কথা প্রয়োজন। সম্প্রতি সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়িয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিপুল আর্থিক সাহায্যও আটকে দেওয়া হয়েছে।
ফলে তিক্ত হয়েছে দু’দেশের সম্পর্ক। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি)পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দস্তগীর বলেন, ভারত সম্পর্কে ধারণাই আমেরিকা ও পাকিস্তানের মধ্যে মতবিরোধের সব চেয়ে বড় কারণ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বোঝাতে চায়, পাকিস্তানের পক্ষে দিল্লি বিপদের কারণ নয়।
কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সব বিষয়ে ‘খোলাখুলি’ আলোচনা প্রয়োজন। দস্তগীর আরো বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে ভারত প্রচুর সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতের আগ্রাসী মনোভাবকেও যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দিচ্ছে না। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।” তার দাবি, “ভারতের বর্তমান সরকারের মনোভাবের ফলেই আপাতত শান্তি ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম।”
আফগানিস্তান নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেঁড়েছেন দস্তগীর। তার মতে, পাক-আফগান সীমান্তবর্তী উপজাতি অধ্যুষিত এলাকা, করাচি, বালুচিস্তানকে জঙ্গিমুক্ত করেছে পাকিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিপর্যস্ত হওয়ার দায় যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের উপরে দায় চাপাতে চাইছে। কিন্তু আফগানিস্তানে বিভিন্ন পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর কোনও উদ্যোগই নেয়নি ওয়াশিংটন।
আফগানিস্তানে সন্ত্রাস ছড়ানোর পিছনে পাক মদত নিয়েও সম্প্রতি সরব হয়েছে কাবুল ও ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে সক্রিয় জঙ্গিরা পাকিস্তানে আশ্রয় পাচ্ছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্পও। পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় তালেবানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়াতেও পরে আর বিশেষ আগ্রহী হয়নি ওয়াশিংটন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানে আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বিশেষ কমেনি। উল্টে সে দেশে পাকিস্তান-চীন-রাশিয়ার নয়া অক্ষ সক্রিয় হওয়ায় দিল্লির চিন্তা বেড়েছে। ওই অক্ষ আইএসকে দমন করতে তালিবানকে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
এরই মধ্যে পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে ভারতের সঙ্গে সেনা স্তরে আলোচনা ফের শুরু করার কথা ভাবছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, ফের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস স্তরে কথা শুরু করতে পারে দু’দেশের সেনাবাহিনী। সূত্র: আনন্দবাজার