মহীশুরের শেষ শাসনকর্তা টিপু সুলতান সম্পর্কে কিছু আশ্চর্য তথ্য

0
টিপু সুলতান

১) টিপু সুলতান ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। ১৭৯৯ সালের মহীশুরে টিপু সুলতানদের নিহত হওয়ার পরই ইংরেজরা নিশ্চিত হয়েছিলো তারা পুরো ভারতকে করায়ত্ব করতে পেরেছে। উল্লেখ্য ইংরেজরা নয়, টিপু সুলতানের খুব কাছের লোকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই টিপু সুলতানকে নিহত হতে হয়।

২) টিপু সুলতানকে বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে চেনে, আসলে ভারতে তার পরিচিত অন্যভাবে। ভারতের মুসলমানরা টিপু সুলতানকে শুধু শাসক বা যোদ্ধা হিসেবে নয়, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বও হিসেবে চিনে। এজন্য ভারতীয় মুসলমানরা তার নামের আগে হযরত এবং পরে রহমতুল্লাহআলাইহি শব্দ খানা যোগ করেন।

৩) টিপু সুলতান সাধারণ কোন ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি যুদ্ধবিদ্যায় অসম্ভব পারদর্শী ছিলেন। তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিখুত যুদ্ধ প্ল্যান তৈরী করতে পারতেন, যা বর্তমান সময়ে চিন্তা করা অসম্ভব।

৪) টিপু সুলতান সর্বপ্রথম জ্বালানি সমৃদ্ধ রকেট বা মিসাইল প্রযু্ক্তি ব্যবহার করেন। তিনি জ্বালানি সমৃদ্ধ কোনো ধাতব বস্তুকে ত্বরণ প্রয়োগে মধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে ঊর্ধ্বে নিক্ষেপ করে সর্বাধিক অনুমিত নির্দিষ্ট দূরত্বে পাঠাতে সক্ষম হন। অর্থাৎ লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হন। তিনি ফাতহুল মুজাহিদিন’ নামে একটি মিলিটারি ম্যানুয়াল (পত্রিকা) লিখেন ; যেখানে পৃথিবীতে সর্বপ্রথম জ্বালানি রকেট-এর ব্যবহারবিধি এবং একাধিক রকেট লাঞ্চার কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তা বর্ণনা করেছেন। পরবর্র্তীতে এ প্রযুক্তিটি ব্রিটিশ দস্যুরা চুরি করে নিয়ে যায়। এই নতুন বিষয় পেয়ে দস্যু ব্রিটিশরা তাদের গবেষণাগার ‘উল্ভিচ ওয়ারেন’-এ ‘রকেট প্রযুক্তির উপর বিস্তর গবেষণা’ শুরু করে এবং ‘রকেট প্রযুক্তির উন্নয়ন’-এর জন্য ব্যবহার করে।

৬) টিপু সুলতানদের জীবনের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ঘটনা – ভূমির স্বাধীনতা ও প্রজাদের নিরাপত্তার জন্য নিজ প্রাণপ্রিয় পুত্রদের ইংরেজদের কাছে বন্ধক রাখা।

৭) ইংরেজরা একমাত্র তার প্রতিরোধের কারণেই গোটা হিন্দুস্তান কব্জা করতে ব্যর্থ হচ্ছিল। একারণে তারা তাঁর বিরুদ্ধে মরিয়া হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। মহীশুর বাহিনীর সাথে ইংরেজ বাহিনীর ফয়সালাকারী যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৭৯৯ সালের মে মাসে। ৪ মে টিপু সুলতান শত্রু বাহিনীর মোকাবেলায় অবতীর্ণ হন। বিশ্বাসঘাতক পরিবেষ্টিত হয়ে তাকে যুদ্ধ করতে হয়। এমনকি তার ব্যক্তিগত সহচর গোলাম রাজা খানও তার সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে। তার কাছে পানি থাকা স্তত্বেও সুলতানকে পানি দিতে অস্বীকার করে এবং সুলতান সারা দিন পানির পিপাসায় ছটফট করেন। এই বিশ্বাসঘাতক সুলতানকে ব্রিটিশদের কাছে আত্মসমর্পনের কুপরামর্শ দেয়। সে সময় তাকে লক্ষ্য করেই টিপু সুলতান সেই বিখ্যত উক্তিটি করেন- “আমার কাছে সিংহের একদিন জীবন শিয়ালের শত বছরের জীবনের চেয়ে উত্তম।”

টিপু সুলতানের জীবনী থেকে হিন্দু-মুসলিম সবাই দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে