আমাদের সবারই মাথাব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। সবাই কমবেশি এই সমস্যায় ভোগেন। যেকোন বয়সেই এটা হতে পারে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গোটা বিশ্বে অর্ধেক পরিণত মানুষ এই সমস্যার সম্মুখীন হন। সাধারণত খুব বেশি মানসিক চাপ কিংবা অবসাদে থাকলে মাথাব্যথা হয়। তবে মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, দুশ্চিন্তা এবং বিষন্নতায় ভুগলেও এই ব্যথা হতে পারে।
অনেকে মাথা ব্যথা সমস্যায় এতটাই কাবু হয়ে পড়েন যে নিয়মিত কাজ কিংবা পড়াশোনা করতেও তাদের সমস্যা হয়।
মাথার যেকোন পাশ থেকেই এই ব্যথা শুরু হতে পারে। আবার দুইপাশে একই সঙ্গেও ব্যথা হয়। চোখের সমস্যার কারণেও অনেকসময় মাথাব্যথা হয়। একারণে কারো নিয়মিত মাথা ব্যথা হলে একবার চোখের চিকিৎসক দেখানো উচিত।
ইন্টারন্যাশনাল হেডেক সোসাইটি’র তথ্য অনুযায়ী, মাথা ব্যথা যখন কোন কারণ ছাড়াই হয় ,সেটা প্রাইমারী সমস্যা । তবে অন্য কারণে মাথাব্যথা হলে সেটা চিন্তার কারণ। যেমন – ব্রেইন টিউমার, উচ্চ রক্তচাপ, গ্লুকোমা,প্যানিক অ্যাটাক, স্ট্রোক , ইনফ্লুয়েঞ্জা , সাইনাস ইত্যাদি। যাদের সর্দিকাশির প্রবণতা বেশি, সাইনাসের কারণে তাদের মাথাব্যথা হতে পারে। এরকম সমস্যায় নিয়মিত ভুগলে একবার এক্স-রে করিয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথা বেশ পরিচিত সমস্যা। মাথার মধ্যে রক্তের স্প্যাজম হলে মাইগ্রেনের সমস্যা হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে এই স্প্যাজম বেশ তীব্র হয়। ফলে প্রায়ই মাথাব্যথা হয়।
টেনশন বা দুশ্চিন্তার কারণে অনেকের মাথা ব্যথা হয়। মাথার পিছনে ব্যথা শুরু হয়ে এটা ঘাড় বা পিঠ, এমনকি সারা শরীরে ছড়িয়ে যায়। ব্রেন টিউমারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে কোনও লক্ষণ থাকে না। মস্তিষ্কের উপর টিউমার যখন চাপ বাড়াতে থাকে,তখন এটি ধরা পড়ে। ব্রেন টিউমারে মাথাব্যথার সঙ্গে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া,কথা বলতে সমস্যা হওয়া,হাত-পায়ে দুবর্লতা,চোখে কম দেখা ইত্যাদি দেখা যেতে পারে। ব্রেন টিউমারের ক্ষেত্রে মাথাব্যথা হলে সারাদিন মাথায় কমবেশি অস্বস্তি থাকে। এরকম হলে দিন বেশিদিন অপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
মাথাব্যথা যে কারণেই হোক না কেন,সঙ্গে সঙ্গে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। ঠিক কোন কারণে মাথাব্যথা হচ্ছে তার চিকিৎসা জরুরি। কারো কারো মাথাব্যথা হলে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিলেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু যাদের ঠিক হয় না, আবার ঘন ঘন এই সমস্যা হয় তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কিছু কিছু ঘরোয়া চিকিৎসাতেও অনেকসময় মাথাব্যথা কমে যায় যেমন-আদা চা সেবন, ব্যথানাশক বাম ব্যবহার ইত্যাদি। এছাড়া মেডিটেশন, আকুপাংচার চিকিৎসাও মাথাব্যথা সারানোর জন্য বেশ উপকারী।