মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার কিংবা অভিশংসনের নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রোববার দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট যদি এমন নির্দেশ দেন, তবে তা অগ্রাহ্য করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আগাম নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। এই পরিস্থিতিতে দেশটির পার্লামেন্ট ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী। আদালতের আদেশ সত্ত্বেও সরকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বিরোধী দলের নেতাদের কারামুক্তির নির্দেশ না দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রোববার সকালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানের পাশে বসে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনিল সাংবাদিকদের বলেন, সরকার এ তথ্য পেয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট শিগগিরই প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন। এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘অসাংবিধানিক’ উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট এ ধরনের কোনো নির্দেশ দিলে সেনাবাহিনী তা প্রত্যাখ্যান করবে।
বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান অচলাবস্থার মধ্যে রোববার দ্বীপ দেশটির পার্লামেন্ট ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী। বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের পার্লামেন্টে প্রবেশ ঠেকাতে সেনাবাহিনী পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে রেখেছে। সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ না করে রোববার সকালে পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি জেনারেল আহমেদ মোহাম্মদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
এর আগে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট গত বৃহস্পতিবার কারাগারে থাকা বিরোধীদলীয় নেতাদের মুক্তির আদেশ দেন। তবে ইয়ামিন সরকার এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করে এবং গতকাল শনিবার পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করে। পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ মেনে চলার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে।
বৃহস্পতিবার মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক আদেশে বলেন, নয়জন রাজনৈতিক বন্দীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এই নয়জনই বিরোধীদলীয় নেতা। বন্দীদের মধ্যে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদও রয়েছেন। আদালত বলেছেন, এসব রাজনৈতিক বন্দীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ছাড়া বহিষ্কার করা ১২ জন আইনপ্রণেতাকে স্বপদে ফিরিয়ে আনার আদেশও দিয়েছেন আদালত। এই ১২ জন আইনপ্রণেতার ওপর থেকে বহিষ্কারাদেশ ফিরিয়ে নেওয়া হলে ৮৫ সদস্যের আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে মালদ্বীপের বিরোধী দল।
২০১৫ সালে সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে নাশিদকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। জাতিসংঘ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র মালদ্বীপের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া নির্দেশকে স্বাগত জানায় এবং দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে।