ঈশ্বর কখনও পরিশ্রমীদের হতাশ করেন না। সময় তরান্বিত করেন, কেবল দেখতে তারা ভেঙে পড়েন কি-না! সহজেই সব পায়ের কাছে লুটোলে ঘাম রক্তের মূল্য থাকে কতটুকু? তুলির প্রথম আঁচড়েই চিত্র ফুটে উঠলে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিকে ক’জন মনে রাখতো? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি প্রথম দিন থেকেই কবিগুরু হয়ে গেছিলেন? না-কি শাহরুখ খান লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের পরপরই বলিউড বাদশা হন? চড়াই-উৎরাই না পেরুলে জীবন সুন্দর হয় না। দিগ্বিজয়ী সকল বীরের উপন্যাস ট্র্যাজেডিতে ঠাঁসা। অপূর্ণতার রেলগাড়ি একদিন পূর্ণতার স্টেশনে ঠিক থামে!
লিওনেল আন্দ্রেস মেসির অপূর্ণতার রেলগাড়ি এবার পূর্ণতার দেখা পেয়েছে। ফুটবল দেব আর কতবার প্রিয় শিষ্যকে নিরাশ করবেন! আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর দিয়াগো মারাদোনা ইহলোক ত্যাগ করেছেন। স্বর্গে গিয়ে নিশ্চয়ই ঈশ্বরের কাছে মেসির জন্য বর চেয়েছেন! মারাদোনা একা নন, তাবৎ দুনিয়ার ভক্তকূল কাঁদতে কাঁদতে উপাসনার আসন ভিজিয়েছে। না গলে উপায় কি দেবতার!
চেষ্টা করেছেন বারংবার। ব্যর্থ হয়েছেন। নিরবে, অভিমানে, নিভৃতে দুঃখ সয়েছেন। মেসির নির্ঘুম রাতেদের ছুটি মিলবে এবার। শ্রেষ্ঠত্বের যে তর্কটা চলছিল বছরের পর বছর ধরে, সেখানে যতিচিহ্ন বসালেন লিও মেসি। শিরোপা হাতে শিশুসুলভ উদযাপন যেন সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে কোলে নেওয়া পিতার কথা মনে করায়। জাদুকরের জাদুর কাঠির স্পর্শে নয়, আরাধ্য শিরোপার ছোঁয়ায় বহুদূর, বহুদূরে হাসিমুখে নিয়ে গেলেন নিজেকে।
বাতাসে অনুরণন কিছু শব্দের। বেদনার নীলাভ আকাশে যারা ভেসে বেড়াবে সাদা মেঘের ভেলায় চেপে। মেসি, শ্রেষ্ঠত্ব, অমরত্ব!