আরিফুল ইসলাম রনি
টাইব্রেকার নিয়ে কিছু বলার নেই। এখানে অনেক কিছুই হয়, অনেক কিছু পক্ষে আসে, বিপক্ষে যায়। কিন্তু আমি আসলে জানলুইজি দোন্নারুম্মাকে দেখে মুগ্ধ ও অভিভূত অন্য অনেক কিছুতে…
গোলকিপিংয়ে টেকনিক্যাল দক্ষতা, স্কিল, গোলবারের নিচে ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি শরীরের বিস্তৃতি, এসব তো আছেই… কিন্তু টুর্নামেন্ট জুড়ে ম্যাচের পর ম্যাচে তার স্থিরতা, কতৃত্ব (অথোরিটি) আর নিজে উপর বিশ্বাস… এসব অবিশ্বাস্য….
সেটা নরম্যাল সেভ হোক বা দুর্দান্ত কিছু, কোনো পাস, জটিল মুহূর্তে তার ছুটে আসা, জাম্প কিংবা ফিস্ট… এসব এতটাই ‘ডিসাইসিভ’…
মাঠে তার হাঁটাচলা, শরীরী ভাষা, তাকানো … সবকিছুতেই প্রতিচ্ছবি জমাট আত্মবিশ্বাসের… অদ্ভুত রকমের শান্ত, স্থির থাকেন…
একটা স্পর্ধা ফুটে ওঠে যেন , কিন্তু তা দারুণ নান্দনিক। দেখতে ভালো লাগ…
মাঠে তার বিচরণে মিশে থাকে প্রচণ্ড গর্ব , যেন কিছুই পরোয়া করে না। কিন্তু তাতে অহম নেই, দেখে সমীহ জাগে…
মনে হয় তিনি যেন সময়টার রাজা… এই মাঠ, ওই এলাকার কর্তা, যার প্রতিটি পদক্ষেপ বার্তা দেয়, ‘তোরা চিন্তা করিস না, আমি আছি…’
একটা আশ্চর্য AURA আছে যেন, সবাই যেটায় বশ ও বুঁদ হতে বাধ্য…
অথচ তার বয়স মোটে ২২…
টাইব্রেকারের আগে সবাই তাকে নানা কিছু বলেন। তাকে খুব বিচলিত মনে হয় না। যেন ‘আরে এটা তো আমারই ঘরবাড়ি
আমার আঙিনা, আমার জগত…’
টাইব্রেকারে শেষ শট ঠেকিয়ে তিনি নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে হাঁটা দিলেন। যেন কিছুই হয়নি। তার ব্যক্তিত্বেরই ছাপ হয়তো, ‘এ আর এমন কী…!’
হ্যাঁ, তিনি নতুন কেউ নন। বয়স কম হলেও অভিজ্ঞতা খুব খুব কম নয়। কিশোর বয়স থেকেই নিজেকে জানান দিয়েছেন। ১৬ বছর বয়সে যিনি মিলানের গোলবারে দাঁড়ান, ১৭ বছর বয়সে ইতালির অ-২১ দলে খেলেন, ১৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবলেও যার ওপর ভরসা রাখে ইতালির মতো দল… তিনি তো স্পেশাল কিছুই…
তার পরও… প্রথম বড় কোনো টুর্নামেন্টে এসে এভাবে রাজত্ব করা এবং গোলকিপার হয়ে প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট হওয়া মানে অসাধারণ কিছু…. এবং অবশ্যই, গ্রেটনেসের পরিষ্কার আভাস…
জানপিয়েরো কোম্বি, দিনো জফ, ওয়াল্টার জিঙ্গা, জানলুকা পাইউকা, ফ্রানচেস্কো টোলডো, জানলুইজি বুফ্ফন… গ্রেট ইতালিয়ান গোলকিপারদের মিছিলে স্বাগত দোন্না…
তুমি তো ফ্রি এজেন্ট এখন… পিএসজিতে না গিয়ে চলে আসো আবাহনীতে, তোমাকে দেখি…
ফেসবুক থেকে