রাশিয়ায় ব্রিটিশ কাউন্সিলে তালা, ২৩ কূটনীতিক বহিষ্কার

0
ল্যরি ব্রিস্টো
রাশিয়ায় ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ল্যরি ব্রিস্টো

২৩ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারে ব্রিটেনের এক সিদ্ধান্তের বদলা হিসাবে রাশিয়া সমান সংখ্যক ব্রিটিশ কূটনীতিককে মস্কো ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধের নির্দেশ। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আজ (শনিবার) বলা হয়েছে এ সপ্তাহের মধ্যে ২৩ জন ব্রিটিশ কূটনীতিককে মস্কো ছাড়তে হবে। এছাড়া, রাশিয়ায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমস্ত কার্যক্রম এবং সেন্ট পিটার্সবুর্গ শহরে ব্রিটিশ কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মস্কোতে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ল্যরি ব্রিস্টোকে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে রুশ সরকারের এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদূত মাত্র মিনিট দশেক সেখানে ছিলেন। খবর বিবিসির

 ল্যরি ব্রিস্টো
রাশিয়ায় ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ল্যরি ব্রিস্টো

ইংল্যান্ডের স্যালসবারি শহরে এ মাসের ৪ তারিখে সাবেক এক রুশ ডাবল এজেন্টকে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টার পর ব্রিটেন এই ঘটনার জন্য সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করে কদিন আগে ২৩ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। মস্কো একই ধরণের পাল্টা ব্যবস্থা নেবে সেটা ধারণা করাই হচ্ছিল। তবে মস্কো থেকে বিবিসির সংবাদদাতা সারাহ রেইন্সফোর্ড বলছেন, রাশিয়া ব্রিটেনের চেয়েও কঠোরতর পথ নিচ্ছে।

এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘প্রমাণ ছাড়া রাশিয়াকে দায়ী করার এবং উস্কানিমুলক আচরণের জন্য রাশিয়া এই ব্যবস্থা নিচ্ছে…২৩ জন ব্রিটিশ কূটনীতিক এখন থেকে অবাঞ্ছিত, ব্রিটেন যদি আরো বৈরি আচরণ করে, তাহলে আরো পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাশিয়ার রয়েছে’।

তবে সংবাদদাতা বলছেন, পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায় এমন কিছু এখনও রাশিয়ার কাছ থেকে দেখা যাচ্ছেনা। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন- রাশিয়ার জনগণের সাথে ব্রিটেনের কোনো বিরোধ নেই, ‘কিন্তু নিজেদের রক্ষায় ব্রিটেন করণীয় সবকিছু করবে’। ওদিকে বিষ প্রয়োগ নিয়ে ব্রিটেন রাশিয়ার ওপরে চাপ বাড়িয়েই চলেছে। শুক্রবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বিষাক্ত নার্ভ গ্যাস প্রয়োগের জন্য সরাসরি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে দায়ী করেছেন।

প্রতিক্রিয়ায় পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘এ ধরণের কথাবার্তা ক্ষমার অযোগ্য’। রাশিয়ার ২৩ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার সাবেক দ্বৈত গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপল ও তার মেয়ে ইউলিয়ার ওপর নার্ভ এজেন্ট গ্যাস ব্যবহারের ঘটনায় তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এ ঘোষণা দিয়েছেন।

মে বলেছেন, যাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে তারা সবাই অঘোষিত গোয়েন্দা কর্মকর্তা। যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়ার জন্য তারা এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে। এসময়ের মধ্যে তারা যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাবার সময় পাবেন। থেরেসা মে বলেন, গেল ৩০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে একবারে এত বেশি সংখ্যক কূটনীতিক বহিষ্কার করা হলো। এরমধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো রাশিয়া আমাদের দেশের বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরনের কাজ করেছে।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া ছিল ‘পুরোপুরি ঘৃণ্য’। রাশিয়ার তৈরি নভিচক নার্ভ এজেন্ট গ্যাসের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যাও চায়নি বলে জানিয়েছেন থেরেসা মে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই ঘটনাকে ‘বিদ্রূপাত্মক, ঘৃণ্য ও অবাধ্যতার’ সঙ্গে ডিল করা হয়েছে। আমরা যুক্তরাজ্যে রাশিয়ার গোয়েন্দা নেটওয়ার্ককে পুরোপুরি এলোমেলো করে দিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছি। রাজ পরিবারের কোনো সদস্য বা দেশটির কোনো মন্ত্রী রাশিয়া বিশ্বকাপে যোগ দেবেন না বলেও জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।