২ বছর অন্তর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজনের চিন্তাভাবনা বেশ কয়েকদিন যাবতই করছে ফিফা। বিশ্বজুড়ে ফুটবল আরও জনপ্রিয় করতে, সবার অংশ নেওয়ার সুযোগ বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
কিন্তু ফিফার এই ভাবনার সাথে অনেকেই দ্বীমত পোষণ করেছেন। ইউরোপিয়ান ফুটবলের প্রধান
নিয়ন্ত্রক উয়েফার প্রধান আলেকসান্দর সেফেরিন এ নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। এই তালিকায় আরও রয়েছে বিশ্ব ফুটবলের আরো গুণী ব্যাক্তিত্ব ও পন্ডিতরা। তবে ফিফার জন্য ভালো খবর হলো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক জরিপের পর তারা জানিয়েছে, দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনে সমর্থন দিয়েছেন বেশির ভাগ সমর্থক।
চার বছর পর আয়োজিত হয়ে আসছে বিশ্বকাপ। দুই বছর পর পর আয়োজনটি করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে গত মে মাসে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করেছিল ফিফা। ভোট আয়োজনের প্রতিষ্ঠান ‘ইউ গভ’কে দিয়ে এই জনমত জরিপে ১৫ হাজার ফুটবলপ্রেমী অংশ নেন।
ফিফা জানিয়েছে, এর মধ্যে ৫৫ শতাংশই বিশ্বকাপ আয়োজনের সময় চার বছর থেকে কমিয়ে আনার পক্ষে। ৩০ শতাংশ ভোটার দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রতি বছর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন ১১ শতাংশ এবং ১৪ শতাংশ তিন বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে মত দেন।
ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ফুটবলের ঐতিহ্যগত বাজার এবং উন্নয়নমূলক বাজারের মধ্যে ভাবার মতো পার্থক্য রয়েছে।’ অপেক্ষাকৃত তরুণ ফুটবলপ্রেমীরা নাকি পরিবর্তন নিয়ে অনেক বেশি ইতিবাচক বলে জানিয়েছে ফিফা। সংস্থাটি এ নিয়ে আরও বড় পর্যায়ে জরিপ চালাবে। এক শ-রও বেশি দেশজুড়ে ১ লাখ লোকের মধ্যে ভোটাভুটি আয়োজনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পথে রয়েছে ফিফা।
নব্বই দশকে একবার দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের রব তুলেছিল ফিফা। গত মার্চে বিষয়টি নতুন করে উত্থাপন করেন ফিফার ফুটবল উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ও আর্সেনালের সাবেক কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার।
যুক্তিতে বলা হয়, দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজন করলে আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। তাতে আফ্রিকা, এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোর ফুটবল ফেডারেশনের লাভ হবে। কারণ এসব মহাদেশের বেশির ভাগ ফেডারেশন আর্থিকভাবে ফিফার ওপর বেশি নির্ভরশীল।
যদিও অনেকেই এমন ভাবনার বিপক্ষে। উয়েফা সভাপতি সেফেরিন এর আগে ফুটবল সাপোর্টারস ইউরোপের কাছে এক চিঠিতে বলেছেন, ‘ফিফার পরিকল্পনা নিয়ে যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেসব নিয়ে উয়েফা এবং এর জাতীয় অ্যাসোসিয়েশনগুলো বেশ সতর্ক এবং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ফিফার এই কার্যক্রম উয়েফা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং পুরো বিষয়টি খোলাসা করে জানবে।’
তবে ফিফার সদস্য দেশগুলোর সিংহভাগ দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাবে রাজি বলে জানা গেছে। কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের ফুটবল ফেডারেশন এ ব্যাপারে যৌথ বিবৃতি দেয়।