সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত পূর্ব গৌতার ১০ শতাংশ পুনরুদ্ধার করেছে আসাদপন্থি বাহিনী

0
সিরিয়া

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত পূর্ব গৌতার ১০ শতাংশ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনী পুনরুদ্ধার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শনিবার পূর্ব গৌতায় দুপক্ষের মধ্যে স্থল লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস, খবর বিবিসির। রাজধানী দামেস্কে গোলাবর্ষণ করে সরকারপন্থি বাহিনীর আক্রমণের জবাব দিচ্ছে বিদ্রোহীরা, জানিয়েছে অবজারভেটরি।
সিরিয়া
২০১৩ সাল থেকে পূর্ব গৌতা অবরোধ করে রেখেছে সরকারি বাহিনীগুলো, এতে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাটির তিন লাখ ৯৩ হাজার বাসিন্দা ফাঁদে আটকা পড়েছে। দিনের পর দিন অবরোধের মধ্যে থাকায় ওই এলাকায় খাবার ও ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে, অপরদিকে ত্রাণের ট্রাকগুলোও অবরুদ্ধ এলাকাটির ভিতরে প্রবেশ করতে পারছে না।

সিরিয়ার সামরিক বাহিনী বলছে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ’ থেকে অঞ্চলটি মুক্ত করার চেষ্টা করছে। সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের যে কয়টি শক্তিকেন্দ্র এখনও টিকে আছে পূর্ব গৌতা তার অন্যতম। সিরিয়ার সামরিক বাহিনী গৌতার বেসামরিকদের হামলার লক্ষ্যস্থল করছে বলে অভিযোগ বিদ্রোহীদের।

আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত পূর্ব গৌতায় ৬৪০ জন নিহত হয়েছেন, এদের মধ্যে দেড়শটি শিশু রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ পূর্ব গৌতায় ৩০ দিনের অস্ত্রবিরতির কথা ঘোষণা করেছিল। প্রতিদিন পাঁচ ঘন্টার জন্য ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আদেশ দিয়েছিল সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া। কিন্তু সব প্রচেষ্টাই রক্তপাত বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বলেছেন, স্থানীয় লোকজন ‘পৃথিবীর নরকে’ বসবাস করছে। পূর্ব গৌতায় ওই ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’ চলাকালে বেসামরিক বাসিন্দাদের সেইফ প্যাসেজ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া, কিন্তু মঙ্গলবার থেকে ওই পথে কেউ গৌতা ত্যাগ করেনি বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি।

এক বিবৃতিতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, নির্দিষ্ট করা ওই বহির্গমণ পথটি শনিবার কোনো বেসামরিক লোক ব্যবহার করেননি। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আফ্রিনের লড়াইয়ে শহরটির উত্তরে একটি কুর্দি শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে তুরস্ক।

অবজারভেটরি জানিয়েছে, আফ্রিন শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে রাজো শহরটির প্রায় ৭০ শতাংশ তুরস্কের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। অপরদিকে তুরস্কের অভিযানের মুখে কুর্দি বাহিনীগুলোকে সমর্থন দিতে আফ্রিনে প্রবেশ করেছে সিরিয়ার সরকারপন্থি সেনারা। শনিবার তাদের অবস্থানের ওপর তুরস্কের যুদ্ধবিমানগুলোর বোমাবর্ষণে অন্তত ৩৬ সরকারপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে অবজারভেটরি। নিজের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলো থেকে কুর্দি বেসামরিক বাহিনীগুলোকে সরিয়ে দিতে ছয় সপ্তাহ আগে সিরিয়ার ভিতরে অভিযান শুরু করে তুরস্কের সামরিক বাহিনী। কুর্দি বেসামরিক বাহিনীগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে আঙ্কারা।