শনিবার সিরিয়ার স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে সঙ্গে নিয়ে মার্কিন বাহিনী সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। এসময় তারা মোট ১০৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। এর মধ্যে সিরিয়া ৭১টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। হামলার পরপরই বিশ্বজুড়ে এর পক্ষে-বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
হামলার পর এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সিরিয়া, ইরান ও রাশিয়া। তিনটি দেশই এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আমেরিকা, ব্রিটেনও ফ্রান্সকে ‘ক্রিমিনাল’ বা অপরাধী বলে অভিহিত করেছেন।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব তোলে রাশিয়া। এর পক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া, চীন ও বলিভিয়া। বিপক্ষে ভোট দেয় আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, কুয়েত, পোল্যান্ড ও আইভরিকোস্ট। চারটি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল। এগুলো হলো- ইথিওপিয়া, কাজাখস্তান, গায়ানা ও পেরু। সিরিয়া হামলার বিরোধিতা করেছে কিউবা ও ব্রাজিল।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে তিনি যুদ্ধ নয় বরং রাজনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের কথা বলেছেন। মিশর ও আলজেরিয়াও হামলার পক্ষে অবস্থান নেয় নি। হামলার বিরুদ্ধে মিশর গভীর উদ্ধেগ প্রকাশ করে বলেছে, ‘এই হামলা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতীম সিরিয়ার জনগণের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটাবে এবং সিরিয়ায় যে নিরাপদ অঞ্চল গঠন করা হয়েছে তা হুমকির মুখে পড়বে।’ আলজেরিয়া বলেছে, এ হামলা এমন সময় হলো যখন আন্তর্জাতিক সমাজ রাসায়নিক হামলার দাবি সম্পর্কে তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করছিল।
সিরিয়ায় হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ। পাশাপাশি পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করায় সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করেছে সংগঠনটি। নিউ ইয়র্ক, প্যারিস ও গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
অন্যদিকে, আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল, সৌদি আরব, তুরস্ক, কাতার, কানাডা, কলম্বিয়া, ইউরোপীয় কাউন্সিল, জার্মানি, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, নেদারল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া ও স্পেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিপজ্জনক এই অবস্থায় সব পক্ষকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে পরিস্থিতির অবনতি না ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি সিরিয়ার জনগণের ভোগান্তি দূর করার কথা বলেছেন।