যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে সৌদি আরব মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। তেহরানে ইসলামী দেশগুলোর সংসদীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে মঙ্গলবার আয়োজিত এক কনফারেন্সে এই মন্তব্য করেছেন খামেনি। তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়টি আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, পবিত্র শহরটি নিসন্দেহে ফিলিস্তিনে রাজধানী। যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ কাজে লাগেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, খামেনি সৌদি আরবের বিরুদ্ধে জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা করার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘এটা নিশ্চিতভাবে ইসলামিক উম্মাহ ও মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’ বিবৃতির অপর অংশে তিনি বলেন, ‘মুসলিমদের মধ্যে যারা আগে ইরানের সঙ্গে শত্রুতা করেছে আমরা তাদের সঙ্গেও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে প্রস্তুত।’
খামেনি বলেন, ‘বিশাল জনগোষ্ঠী ও ব্যাপক সুবিধা সম্পন্ন ইসলামি বিশ্ব সহজেই বিশাল শক্তি তৈরি করতে পারে আর একতাবদ্ধ হয়ে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। মুসলিম বিশ্বে এমন যুদ্ধক্ষেত্র বন্ধ করতে হবে। জায়নবাদী রাষ্ট্রের জন্য নিরাপদ স্বর্গ তৈরি করতে দেওয়া আমাদের উচিত হবে না।’
সুন্নিপন্থী সৌদি আরব ও শিয়াপন্থী ইরানের মধ্যে অনেকদিন ধরেই ছায়াযুদ্ধ চলছে। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানকে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের আশঙ্কা, ইরান তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। ইরাকযুদ্ধ ও আরব বসন্তের সুযোগ নিয়ে বাড়াতে পারে আঞ্চলিক প্রভাব। বাগদাদ, দামেস্ক, সানা ও বৈরুতের ধারাবাহিকতায় তেহরান মধ্যপ্রাচ্যের বাদবাকি দেশগুলোকে নিজেদের কব্জায় নিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে সৌদি আরবের। এই বাস্তবতায় মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করার লড়াইয়ে নেমেছে তারা।