ব্রিটেনের সলসবুরি শহরে সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়েকে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার পর রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্কের ব্যাপক অবনিত ঘটেছে। চলছে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ২৩ দেশের কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং মস্কো ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে এসব দেশের কূটনীতিককে ডেকে পাঠায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারপর তাদেরকে রা
এসব দেশ রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কারের পরই পাল্টা জবাব হিসেবে রাশিয়ায় থাকা এসব কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে পুতিন সরকার। বহিষ্কারের পরই তাদেরকে রাশিয়া ছাড়তে বলা হলো। জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের কূটনীতিকদের শুক্রবারই রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এবং ব্রিটেনের আরও কূটনীতিক বহিষ্কার হবেন বলেও জানিয়ে দেয় রাশিয়া।
সেন্ট পিটারসবার্গে মার্কিন কনসুলেট বন্ধ এবং ৬০ জন মার্কিন কূটনীতিক বহিষ্কারের পরই এমন সিদ্ধান্ত নিলো মস্কো। মার্কিন কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সময়ই রাশিয়া জানিয়েছিল ‘তাদের বিরুদ্ধে যে সব দেশ অনৈতিকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নেবে ক্রেমলিন।’ ২৩ দেশের কূটনীতিকদের রাশিয়ার ছাড়ার নির্দেশের মাধ্যমে এই কথা কার্যকর করা হলো।
যেসব দেশের কূটনীতিকদের রাশিয়া ছাড়তে বলা হয়েছে, সেগুলো হলো-অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, জার্মানি, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, কানাডা, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, মেসিডোনিয়া, মলদোভা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, ইউক্রেন, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, চেক রিপাবলিক, সুইডেন ও এস্তোনিয়া।
মস্কো আরও জানিয়েছে, তারা বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি, জর্জিয়া ও মন্টেনিগ্রোর কূটনীতিকদেরও বহিষ্কারের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে। তবে বিবৃতিতে ন্যাটোর ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের ২৫টি দেশে ব্রিটেনের পক্ষ নিয়ে ১২০ জন রাশিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের সলসবুরি শহরের একটি বিপণিকেন্দ্রের বাইরে বেঞ্চিতে সাবেক রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। যিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের হয়ে কাজ করছিলেন।
কিছুদিন আগে সের্গেই এর বিষয়ে রাশিয়া অভিযোগ করে বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার গোপন তথ্য যুক্তরাজ্যের কাছে হস্তান্তর করছে, যা রাশিয়ার জন্য চরম উদ্বেগের। তার কিছুদিন পরই নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করে তাদের হত্যা চেষ্টা করা হয়। এরপরই তাদেরকে হত্যাচেষ্টায় রাশিয়া দিকে আঙ্গুল তোলে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন। কারণ এই নার্ভ এজেন্ট শুধু সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে উৎপাদিত হতো।
এ ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন অনুগত ২৫টি দেশ প্রায় ১০০ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। তবে সের্গেইকে বিষপ্রয়োগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। সূত্র: আল জাজিরা