নিজের ফ্ল্যাটের পাঁচ তলার ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন ভারতের জনপ্রিয় তেলেগু টেলিভিশন চ্যানেল (ভি ৬ চ্যানেল)-এর এক নারী সংবাদ উপস্থাপিকা। রবিবার রাতে অফিস থেকে হায়দরাবাদে তাঁর বাসায় ফেরার কয়েক ঘন্টা পরেই আত্মহত্যা করেন তিনি। নিহত ওই নারী অ্যাঙ্করের নাম ভেঙ্কানগরী রাধিকা রেড্ডি (৩৬)। রবিবার রাত ৯টার বুলেটিনেও তিনি শেষ নিউজ পাঠ করেন বলে জানা গেছে। অফিসের কাজ শেষ করেই রাত ১০টা ৪০ মিনিটের হায়দরাবাদের মুসাপেট এলাকায় শ্রীভিলা অ্যাপার্টমেন্টের দোতলায় নিজের রুমে ফিরে আসেন। এরপর সেখান থেকে পাঁচ তলার ছাদে চলে যান এবং সেখান থেকেই নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
কুকাটপল্লী’র সহকারী পুলিশ কমিশনার ভুজঙ্গ রাও জানান ‘ওই নারী তাঁর ব্যাগটি দোতলায় নিজের ফ্ল্যাটের রুমে রেখে সোজা পাঁচ তলায় চলে যান এবং সেখান থেকে নিচে ঝাঁপ দেন। মাথায় ও পায়ে একাধিক আঘাতের কারণে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়’। কুকাটপল্লী পুলিশ ইতিমধ্যেই সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেছে এবং তার ভিত্তিতে তদন্তও শুরু করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর রাধিকার ব্যাগ থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে, যেখানে রাধিকা নিজেই জানিয়েছেন যে মানসিক চাপ থেকেই তিনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন এবং এর জন্য কেউ দায়ী নন। সুইসাইড নোটে তিনি লেখেন ‘মা ব্রেইন ইজ মাই এনিমি’ (আমার মস্তিষ্কই আমার শত্রু)।
রাধিকার সহকর্মীরা জানান, ছয় মাস আগে স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁর এবং তারপর থেকে বাবা-মা ও বোনের সঙ্গে থাকতেন রাধিকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নিউজ চ্যানেলের এক সংবাদ কর্মী জানান, ‘রাধিকার ১৪ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, তার নাম ভানু তেজা রেড্ডি। জন্ম থেকেই সে অটিজমে ভুগছে, কিন্তু পরিবারের এই সমস্যার কথা রাধিকা কখনোই অফিসে জানায়নি এবং সে খুব হাসিখুশি ছিল। অফিসে একজন দায়িত্বশীল কর্মী ছিলেন রাধিকা এবং একাধিক বিষয়ে তিনি অ্যাঙ্করিং করতেন বিশেষ করে ডিভোশনাল বিষয়গুলিতে তিনি খুবই পারদর্শী ছিলেন’।
ওই সহকর্মী আরও জানান, ‘গতকাল রাতে শেষ নিউজ বুলেটিনেও রাধিকাকে খুবই স্বাভাবিক দেখাচ্ছিল, তার মধ্যে কোন আবেদ লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু তার পরেও এত বড় একটা পদক্ষেপ নেবে সেটা আমরা আশা করতে পারিনি’।