৮০ বছর পর বিরল ঘটনার সাক্ষী হলো শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে যমজ শাবকের জন্ম দিয়েছে একটি হাতি। বুধবার দেশটির প্রধান হাতির আশ্রয়স্থল পিনাওয়ালা এলিফ্যান্ট অরফানেজে ২৫ বছর বয়সী সুরাঙ্গী নামের একটি হাতি যমজ শাবকের জন্ম দেয়, যা একটি বিরল ঘটনাই বলা যায়। অনেক প্রাণীই একাধিক সন্তানের জন্ম দিলেও হাতির ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা খুব কমই দেখা যায়। সদ্যজাত ওই শাবক দুটি পুরুষ বলে জানা গেছে।
শ্রীলঙ্কার হাতি বিশেষজ্ঞ জয়ন্ত জয়েওয়ার্দেনে জানিয়েছেন, দেশটিতে ১৯৪১ সালের পর অর্থাৎ ৮০ বছর পর প্রথমবারের মতো যমজ শাবকের জন্ম দিলো কোনো হাতি। এদিকে পিনাওয়ালা এলিফ্যান্ট অরফানেজের প্রধান রেনুকা বন্দারনায়েকে জানিয়েছেন, মা হাতি এবং তার শাবকেরা ভালো আছে। তিনি বলেন, শাবকগুলো আকারে তুলনামূলক খুব ছোট হলেও তারা বেশ স্বাস্থ্যবান।
এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এর আগে ২০০৯ সালে সুরাঙ্গি প্রথম সন্তানের জন্ম দেয় এবং সেটাও ছিল পুরুষ শাবক। সদ্য জন্ম নেওয়া শাবক দুটির বাবা পান্ডুর বয়স ১৭ বছর। হাতির ওই আশ্রয়স্থলে মোট ৮১টি হাতি রয়েছে। ১৯৭৫ সালে বন্য হাতির লালন পালনের জন্য ওই আশ্রয়স্থল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
পর্যটকদের কাছে এটি একটি অন্যতম আকর্ষণীয় এলাকা। তবে করোনা ভাইরাসের বিধি-নিষেধের কারণে দর্শনার্থীদের জন্য হাতির ওই আশ্রয়স্থলটি এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রীলঙ্কায় হাতিকে পবিত্র প্রাণী মনে করা হয়। হাতি রক্ষায় সরকার সম্প্রতি কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে।
বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ শ্রীলঙ্কার অনেক ধনাঢ্য লোকজনকেই সম্পদ প্রদর্শনের মাধ্যম হিসেবে হাতি লালন-পালন করেন। কিন্তু এগুলোর সঙ্গে খারাপ আচরণের প্রচুর অভিযোগও পাওয়া গেছে। হাতি সংক্রান্ত নতুন আইন কেউ লঙ্ঘন করলে তাদের কাছ থেকে হাতিটি সরকারের জিম্মায় নিয়ে যাওয়া হবে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন মানুষের পোষা প্রাণী হিসেবে থাকা হাতির সংখ্যা ২শ। এছাড়া সেখানে বন্য হাতি রয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার। বন্য প্রাণীদের নিয়ে কাজ করা লোকজন বলছেন, গত ১৫ বছরে ৪০টির বেশি হাতির শাবক চুরি হয়েছে।