মৃত্যুর আগে কেন তাজমহলের কাছে যেতে পারেননি সম্রাট শাহজাহান?

1
তাজমহল

তাজমহল নির্মাণের ৫ বছরের মাথায় শাহজাহান তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেবের কাছে সিংহাসন হারান। আওরঙ্গজেব শাহজাহানকে জোর করে বন্দি করে নিজেকে সম্রাট ঘোষনা করেন।
কি ঘটেছিল এই ৫ বছরে!!?

শাহজাহানের রাজত্বকালকে ঐতিহাসিকগণ মুঘল যুগের স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করেছেন। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসে তাঁর রাজত্বকালের শেষের দিকে তাঁর সন্তানদের মাঝে উত্তরাধিকার বিষয়ক দন্দ্ব মুঘল তথা সমগ্র মুসলিম ভারতের ইতিহাসে একটি কলংকময় ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এ কারণে সম্রাট শাহজাহানের শেষ জীবন হয়ে উঠেছিল হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক।

১৬৫৭ খ্রস্টাব্দে শাহজাহান গুরুতর পীড়ায় অসুস্থ হলে এক পর্যায়ে গুজব রটে যে, তিনি জীবিত নেই। কিন্তু পরে তিনি জীবিত আছেন জানাগেলেও তাঁর পুত্রগণের মধ্যে সিংহাসনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হয়। রোগাক্রান্ত অবস্থায় শাহজাহান একটি উইল করে জ্যেষ্ঠ পুত্র দারাকে উত্তরাধিকার মনোনীত করেন।কিন্তু কেন?

মমতাজ মহলের ৪ পুত্র ছিল। দারা ছিলেন সর্বজ্যেষ্ঠ। তিনি নামেমাত্র পাঞ্জাবের শাসনকর্তা থাকলেও তিনি আগ্রায় অবস্থান করে রাজকর্মে পিতাকে সাহায্য করতেন। তিনি হিন্দুদের প্রতি মিত্র ভাবাপন্ন এবং শিয়াদের প্রতি উদার ছিলেন। রুক্ষ্ম মেজাজ, উগ্রস্বভাবের জন্য দরবারের অনেকেই তার প্রতি রুষ্ট ছিলেন। দারা শিকোহ পার্সিয়ান রহস্যময় মানুষ সার্মাদ কাশানির অনুসারী ছিলেন, এবং লাহোরের বিখ্যাত কাদরি সুফি সন্ন্যাসী হযরত মিয়ানমির সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্মানিত ছিলেন। দারা শিকোহ সপ্তম শিখ গুরু গুরু হররাইয়ের সাথে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। দারা শিকোহ ইসলাম ও হিন্দুত্ববাদের মধ্যে মিল থাকা রহস্যময় ভাষা খুঁজতে অনেক শ্রম দেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ৫০ উপনিষদ ১৬৫৭ সালে সংস্কৃত থেকে পার্সিয়ান এ অনুবাদ করেন, যাতে মুসলিম বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় পড়তে পারে। তার অনুবাদকে শিক-ই আকবর (The greatest mystery) বলা হয়। দারা শিকোহ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারটি গুরু গোবিন্দ সিং ইন্দ্রপ্রস্থ ইউনিভার্সিটি, কাশ্মীরি গেট, দিল্লী, এর ভূমিতে এখনো আছে, আর এখন ভারতীয় পুরাতত্ব বিভাগ কর্তৃক জাদুঘর হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে সংস্কারের পরে।

দারা শিকোহ শিল্প সংস্কৃতি, সঙ্গীত ও নৃত্যকলার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।(The ‘Dara Shikoh’ চিত্রকলা ও চারু-লিপির সংকলন যেটা ১৬৩০ থেকে মৃত্যু অব্দি কাজের একত্রীকরণ।) এটা তাঁর স্ত্রী নাদিরা বানুকে উপহার দেয়া হয় ১৬৪১-৪২।এটা তাঁর কাছে ছিল তাঁর মৃত্যু অব্দি যার পরে এলবামকে রাজকীয় পাঠাগারে নেয়া হয় আর পাথরে খোদাই করা দারা শিকোহর সাথে সম্পর্কিত কথাগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে মুছে ফেলা হয়; যদিও সবকিছু ধ্বংস করা হয়নি আর অনেক চারু-লিপি ও চিত্রকলায় তাঁর ছাপ আছে। বেশ কিছু সূক্ষ্ম, এখনো প্রচলিত মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শনের কমিশনের কৃতিত্ব তাঁরই যার মধ্যে আছে – লাহোরে তাঁর স্ত্রী নাদিরা বানুর সমাধি, লাহোরেই হযরত মিয়ানমিরের সমাধি, দিল্লীতে দারা শিকোহ পাঠাগার, কাশ্মীর এর শ্রীনগর এ আখুন মুল্লা শাহ মসজিদ এবং পরি মহল উদ্যান প্রাসাদ। এসব বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়গুলো এবং শিল্প সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা এবং অন্যান্য ধর্মকে ইসলামের সমকক্ষ ভাবায় পরবর্তীতে তাঁর নিষ্ঠুর মৃত্যু হয়।

শাহজাহানের দ্বিতীয় পুত্র সুজা ছিলেন বাংলার শাসনকর্তা। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ ও যোদ্ধা হলেও বাংলার আবহাওয়া তাকে আয়েশী, দুর্বল ও স্থবির করেছিল। উত্তরাধিকার সংগ্রামে শাহ সুজা ছিলেন আওরঙ্গজেবের শেষ প্রতিদ্বন্দ্বী। এই দ্বন্দ্বের শুরুতেই সম্রাট শাহজাহানের আদেশে দারার পুত্র সুলায়মান শাহ সুজাকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন। ১৬৫৮ সালের মে মাসে সুলায়মানের সাথে সুজার একটি সন্ধি হয়। শর্তানুযায়ী সুজাকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শাসনক্ষমতা দেয়া হয়। আওরঙ্গজেব দিল্লীর সিংহাসনে বসার পর সুজাকে তার পদে অধিষ্ঠিত রাখার আশ্বাস দান করেন। কিন্তু সুজা তাকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তিনি যুদ্ধ করারই সিদ্ধান্ত নেন। ১৬৫৯ সালে উত্তর প্রদেশের খাজুয়া নামক স্থানে তাদের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে অনিবার্যভাবে সুজার পরাজয় ঘটে। তিনি প্রথমে বাংলা ও পরে আরাকান পালিয়ে যান। আরাকানের মগ রাজা তাকে প্রথমে সাদরে গ্রহণ করলেও পরে তাদের মধ্যে তিক্ততার সৃষ্টি হয়। অবশেষে ভাগ্যবিড়ম্বিত সুজা আরাকানের মগদের হাতে নিহত হন।

শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে তৃতীয় পুত্র আওরঙ্গজেব ছিলেন সর্বাপেক্ষা অধিক শক্তিশালী ও প্রতিভাসম্পন্ন। তাঁর নিষ্কলুস চরিত্র ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের অকুণ্ঠ সমর্থন লাভে সহায়তা করেছিল। তিনি বিদ‘আত ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। নিজে গান-বাজনায় দক্ষ হওয়া সত্ত্বেও তা শোনা ত্যাগ করেন। পৌত্তলিক ও বিদ‘আতী উৎসবাদি বাতিল করেন। রহিত করেন শির নত করা এবং মাটিতে চুমু খাওয়া। যা পূর্বতন রাজন্যবর্গের জন্য করা হত। বিপরীতে তিনি ইসলামী সম্ভাষণ-বাক্য তথা ‘আসসালামু ‘আলাইকুম’-এর মাধ্যমে অভিবাদন জানানোর নির্দেশ দেন। সম্ভবত এ কারণে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী কিছু লেখক তাকে গোঁড়া হিসেবে অপবাদ দেন। এটি সম্ভবত তাদের কাউকে কাউকে তাকে সালাফী মনে করিয়েছিল। অবশ্য এসব বিষয়ে তিনি সন্দেহাতীতভাবে সালাফী ছিলেন। যদিও তিনি ছিলেন হানাফী মাযহাবপন্থী। আর এ দেশগুলোয় তখন হানাফীরা আকীদার ক্ষেত্রে মাতুরীদীয়্যা ছিলো। অনেক জীবনীকার তাকে সূফী হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

 সম্রাট শাহজাহান
আওরঙ্গজেব

বস্তুত আল্লাহই ভালো জানেন তার অবস্থা ও বিশ্বাস সম্পর্কে। প্রশংসিত কাজগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কুসংস্কার ও বিদ‘আতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, রাফেযী-শিয়া রাজ্যগুলো নির্মূল এবং বিদ’আতী ও পৌত্তলিক উৎসবাদি নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি। এসবের দাবী হলো, তিনি সম্মান, মর্যাদা, নেক দু‘আ পাওয়ার উপযুক্ত। আর এটিই শাসনকার্য পরিচালনায় সালাফ তথা পূর্বসুরীদের কর্মপন্থার বাস্তব প্রয়োগ। এ কারণে আরব সাহিত্যিক শাইখ আলী তানতাবী রহ. তার ক্ষেত্রে ‘খুলাফায়ে রাশিদীনের অবশিষ্টাংশ’ উপাধি প্রয়োগের দাবী করেছেন। তার রচিত ‘রিজালুম মিনাত-তারীখ’ (ইতিহাসের মনীষীরা) গ্রন্থে তিনি তার অমূল্য জীবনী সংযুক্ত করেছেন। সচ্চরিত্র, আল্লাহভীতি ও ইবাদতনিষ্ঠায় তাঁর যুগে মুসলিম সম্রাটদের কোনো উপমা ছিল না। তিনি বিভিন্ন রাজ্যের হানাফী আলেমদের তার নামে এমন ফাতওয়া-গ্রন্থ সংকলনের নির্দেশ দেন, যাতে শরী‘আতের প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান সম্পর্কিত তাদের মাযহাবের প্রায় সবই সন্নিবেশিত হবে। নির্দেশমাফিক বহু খণ্ডে তা রচিত হয় এবং এর নামকরণ করা হয় ‘ফাতাওয়া আলমগীরী’। এটি প্রসিদ্ধি লাভ করে হিজায, মিসর, শাম ও রোমক দেশগুলোয়। এর উপকারিতা ব্যাপকতর রূপ নেয় এবং এটি মুফতীদের উদ্ধৃতিগ্রন্থ হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠে। তিনি প্রায় ৫০ বছর রাজত্ব করেন।

শাহজাহানের চতুর্থ পুত্র মুরাদ ছিলেন গুজরাটের শাসনকর্তা। অত্যধিক ভোগবিলাসী ও মদের প্রতি আসক্ত হওয়ায় তিনি আওরঙ্গজেবের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছিলেন।

তাঁর পুত্রগণের মধ্যে আওরঙ্গজেব ছাড়া কেউই সুচতুর, ধর্মভীরু, সাহসী ও বৃদ্ধিমান ছিলেন না। প্রতিদ্বনদ্বী যুবরাজগণের মধ্যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রভেদই সংঘর্ষকে ত্বরান্বিত করে তোলে। শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ কি ছিল?

১. মুঘল সিংহাসন লাভের সুষ্ঠু উত্তরাধিকরী নীতির অভাবেই শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে সংঘটিত গৃহযুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল। বাবর, হুমায়ন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহান সকলেই প্রতিদ্বনদ্বী আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সংঘটিত সংঘর্ষে জয়লাভ করে সিংহাসন লাভ করেছিলেন। কাজেই উত্তরাধিকার দ্বনদ্ব শাহজাহানের পুত্রগণের মধ্যে সংঘটিত হওয়া ছিলো অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা মাত্র।

২. শাহজাহানের অসুস্থতার সুযোগে দারা সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ভ্রাতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। তিনি আওরঙ্গজেবের অধীনস্থ সকল সুযোগ্য সেনাপতিকে রাজধানীতে ডেকে পাঠান। আওরঙ্গজেবের পুত্রের সাথে সুজার কন্যার বিবাহও দারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ভ্রতাদের প্রতি দারার এ দুর্ব্যবহার উত্তরাধিকার দ্বনেদ্বর অন্যতম কারণ ছিল।

৩. শাহজাহানের দারার প্রতি অন্ধ স্নেহ ও পক্ষপতিত্ব এ দ্বনেদ্বর অন্যতম কারণ ছিল। শাহজাহান সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেও স্বহস্তে রাজ্যভার গ্রহণ না করে দারাকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করার মানসে আওরঙ্গজেবকে দাক্ষিণাত্যের সুবাদার থেকে বঞ্চিত করেন এবং বিজাপুর ও গোলকুন্ডা বিজয় করার সুযোগ থেকেই বঞ্চিত করেন।

৪. সর্বাপেক্ষা যোগ্যতম ভ্রাতা আওরঙ্গজেবের প্রতি ঈর্ষাপরায়ন হয়ে দারা শাহজাহানের কর্ণ বিষাক্ত ও মন ভরাক্রান্ত করে তোলেন। ফলে সম্রাট পুত্রদের পরস্পরের প্রতি উস্কানিমূলক পত্র প্রেরণ করে পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলেন।

৫. চার ভ্রাতার মধ্যে চরিত্রগত, স্থানগত ও মানগত পার্থক্য এ দ্বন্দ্বের জন্য কম দায়ী ছিল না।

৬. ধর্মীয় পার্থক্য ও সংগ্রামকে প্রভাবান্বিত করেছিল সর্বাপেক্ষা বেশি। আওরঙ্গজেবের ন্যায় প্রতিভাবান পবিত্র চরিত্রের অধিকারী আর কেউ ছিলেন না বলে মুসলমানগণ তাকে সমর্থন করতেন সর্বান্তকরণে।

১৬৫৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বপ্রথম বাংলার শাসনকর্তা সুজা স্বাধীনতা ঘোষণা করে নিজ নামে খুৎবা ও মুদ্রাঙ্কন করে সসৈন্য আগ্রা দখল করতে অগ্রসর হন। ১৬৫৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মুরাদও নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। সুচতুর আওরঙ্গজেব এসময় কোনো পদক্ষেপ প্রহণ না করে সুযোগের প্রতীক্ষায় থাকেন। যাহোক, ১৬৫৮ সালে বাহাদুর গড়ের যুদ্ধে সুজা দারা কর্তৃক প্রেরিত বাহিনী দ্বারা পরাজিত হয়ে বাংলায় পলায়ন করেন। এ অবস্থায় আওরঙ্গজেব বুরহানপুর থেকে সসৈন্য যাত্রা করে উজ্জয়নীর নিকট মুরাদের সাথে মিলিত হয়ে ধর্মাটের যুদ্ধে দারা কর্তৃক প্রেরিত বাহিনীকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। এ দুঃসংবাদে ক্ষিপ্ত হয়ে দারা তাদের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে স্বয়ং অগ্রসর হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সামুগড়ের যুদ্ধে দারা সম্পূর্ণ পরাজিত হন।

এরপর আওরঙ্গজেব সরাসরি অগ্রসর হয়ে রাজধানী আগ্রা অধিকার করে পিতাকে আগ্রার দুর্গে নজরবন্দী রেখে স্বহস্তে শাসনভার গ্রহণ করেন।এভাবেই ছল, বল ও কৌশলের সুচারু প্রয়োগ ও সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে, নিজের বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা কাজে লাগিয়ে আওরঙ্গজেব ভারতবর্ষের একচ্ছত্র সম্রাট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এই সংগ্রাম নিঃসন্দেহে নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতামূলক, কিন্তু ক্ষমতার জন্য যেকোনো সীমা লঙ্ঘণ করা মুঘল বংশের রক্তে ছিল। উল্লেখ্য, সম্রাট শাহজাহানও তার যৌবনে পিতা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, জাহাঙ্গীর করেছিলেন তার পিতা আকবরের বিরুদ্ধে। কিন্তু আওরঙ্গজেবের সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি ছিল এবং প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিলেন যথেষ্ট দক্ষ। তাই বলা যায় প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদকে সার্থক প্রমাণ করেই আওরঙ্গজেব নিজেকে তুলনামূলক যোগ্যতর হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং সম্রাট পদবীটি অর্জন করেন। উত্থান হয় এক নতুন সম্রাটের, যে শুধু বংশসূত্রে নয় কর্মসূত্রেও সম্রাট।

শাহজাহানকে তাঁর জীবনের শেষ ৮ বছর আগ্রার দুর্গে গৃহবন্দি হয়ে থেকেই কাটাতে হয়। এখান থেকেই সম্রাট শাহজাহান অপলক চোখে তাকিয়ে থাকতেন তাজমহলের দিকে । এখানেই তার মৃত্যু হয়। স্ত্রী মমতাজের পাশে তাজমহলেই শাহজাহানকে সমাধিত করা হয়।

লেখকঃ সাইফুল ইসলাম

*তাজমহল ও শাহজাহান পর্ব সমাপ্ত। আগের দুই পর্বের লিংকঃ

পর্ব-১ ঃ শাহজাহান-মমতাজ প্রেম, বিতর্ক এবং তাজমহল নিয়ে সাম্প্রতিক ষড়যন্ত্র

1 মন্তব্য

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে