ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে সহজ জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি তাই তাদের জন্য ‘নিয়মরক্ষার’। বাংলাদেশ কিন্তু মোটেও তা ভাবছে না, আর সে কারণেই নিজেদের সেরাটা দিয়ে লড়বে স্বাগতিকরা। মিরপুরে বেলা ১২টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে গাজী টেলিভিশনে।
বাংলাদেশের ফাইনাল যেখানে নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই, সেখানে মঙ্গলবারের ম্যাচটি জিম্বাবুয়ের ফাইনাল স্বপ্ন টিকে রাখার। টাইগারদের বিপক্ষে হারলেও গ্রায়েম ক্রেমারদের আশা বেঁচে থাকবে, তবে তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার শেষ ম্যাচের দিকে। ওই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জিতে গেলে বাদ পড়বে আফ্রিকান দেশটি।
নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানের জয়ে বোনাস পয়েন্ট পাওয়ায় আগেভাগে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রানরেটে কিছুটা এগিয়ে জিম্বাবুয়ে। ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটিতে জেতার বিকল্প নেই হিথ স্ট্রিকের দলের। অবশ্য জিতলেই যে জিম্বাবুয়ে চলে যাবে, বিষয়টি এমনও নয়। তখন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার শেষ ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। ওই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা হেরে গেলে ফাইনালে বাংলাদেশের সঙ্গী হবে জিম্বাবুয়ে। তবে শ্রীলঙ্কা জিতে গেলে এবং রানরেটে এগিয়ে থাকলে ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
এ ম্যাচেও সাকিবের কাছে প্রত্যাশা থাকবে অনেক বেশি। বাংলাদেশ অবশ্য অন্যদের সমীকরণ নিয়ে ভাবছে না। আগের দুই ম্যাচের মতো মঙ্গলবারও চায় দাপুটে জয়। তামিম ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে শুনিয়ে গেছেন তেমনটাই, ‘ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় সামনের দুটি ম্যাচ গুরুত্বহীন হয়ে গেছে, এমনটা আমরা ভাবছি না। আমাদের জন্য প্রত্যেকটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। ফাইনাল যখন আসবে, তখন চিন্তা করব। এই মুহূর্তে মঙ্গলবারের ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে আছি আমরা। এখানে আরও ভালোভাবে জিততে চাই।’
পুরনো ছক মেনেই জিম্বাবুয়েকে ১৭০ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবারের ছকটা তেমনই হওয়ার কথা। বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনারদের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা দিতে হয় সবসময়। তাই স্বাগতিকদের স্কোয়াডে একটি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে বসিয়ে বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
এ ব্যাপারে সরাসরি কিছু না বললেও তামিম যতটুকু বলেছেন তাতেই বোঝা যাচ্ছে একাদশে পরিবর্তন আসছে। বাংলাদেশ ওপেনারের বক্তব্য, ‘ভালো অবস্থানে আছি বলে আমাদের গা ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। জেতার জন্য কম্বিনেশন যেমন দরকার, তেমনটাই করা হবে। প্রতিপক্ষের দুর্বলতা মাথায় রেখেই একাদশ গড়ে থাকে টিম ম্যানেজমেন্ট।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘সেক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসলেও আসতে পারে। তবে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়েই মাঠে নামব। জয়ের ধারা বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
সব মিলিয়ে মঙ্গলবার জিম্বাবুয়েকে কঠিন পরীক্ষার সামনেই পড়তে হবে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের সামনে। পরিসংখ্যানও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সর্বশেষ ৯ ওয়ানডের সব ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে এটা দুই দলের ৬৯তম লড়াই। আগের ৬৮ ম্যাচের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে। ৪০ জয়ের বিপরীতে টাইগাররা হেরেছে ২৮ ম্যাচ।
“মিরাজকে বোলিংয়ের লাইনই কি ধরিয়ে দিচ্ছেন মুশফিক? পরিসংখ্যান নিয়ে অবশ্য ভাবছে না জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালের পথ তৈরি করতে তারা দারুণ আত্মবিশ্বাসী। ব্যাটসম্যান পিটার মুরের কণ্ঠে পাওয়া গেল সেই আত্মবিশ্বাস, ‘অবশ্যই আমারা টুর্নামেন্টের ফাইনালকে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। সামনে আমাদের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব খেলতে হবে। ফাইনাল খেলে সেই প্রস্তুতিটাও সেরে রাখতে চাই। কালকের ম্যাচটিতে জয় আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আশা করি মাঠের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে ম্যাচটি জিততে পারব।