রাজনৈতিকভাবে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেশের স্বার্থে বিজেপিকে হারানো জরুরি। কংগ্রেসনেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বিরোধী দলগুলোর বৈঠকের মূল সুর ছিল এটাই। বৃহস্পতিবার এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের ১৭টি বিরোধী দলের নেতারা।
বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সংসদের ভেতর ও বাইরে বিজেপির ‘জনবিরোধী’ নীতির বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা সবাই অনুভব করেছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটা ন্যূনতম কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
বৈঠকে যে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় সেগুলির মধ্যে রয়েছে চাকরির বাজার সংকুচিত হয়ে যাওয়া, জাত ও ধর্মভিত্তিক দাঙ্গায় উসকানি দেওয়া, আধারের মতো ভালো বিষয়কে খারাপ কাজে ব্যবহার করার প্রবণতা, মূল্যবৃদ্ধি, গ্রামীণ ভারতকে অবহেলা করা প্রভৃতি। আজাদ বলেন, চেষ্টা চলছে জাতীয় স্তরে ঐকমত্য গড়ে তোলার। তিনি বলেন, আঞ্চলিক স্তরে বিভিন্ন দলের মধ্যে বিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে এক জোট হওয়া প্রয়োজন।
বিকেল পাঁচটায় সংসদ ভবন চত্বরে ইউপিএর চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীর সভাপতিত্বে বৈঠক শুরুর আগেই রাজস্থানের দুই লোকসভা ও এ বিধানসভার ভোটে কংগ্রেসের জয়ের খবর চলে আসে। দলীয় নেতারা এই সাফল্যের জন্য কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ও সোনিয়াকে অভিনন্দন জানান। গুলাম নবি আজাদ জানান, অনেকেই সোনিয়া-রাহুলদের বলেছেন, বিজেপির পতনের এই শুরু।
দেখার ছিল সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠকে এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার আসেন কি না। জল্পনা উড়িয়ে তিনি এলেও বৈঠক থেকে সবার আগে তিনি বেরিয়ে যান।
সোনিয়া, রাহুল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও অন্য কংগ্রেস নেতারা ছাড়াও বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শারদ পাওয়ার, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লাহ, আরজেডির জয়প্রকাশ নারায়ণ যাদব, তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়ান, সিপিআইয়ের ডি রাজা, সিপিএমের মহম্মদ সেলিম, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব। আজাদ জানান, অন্য যেসব দল বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে আসছে তাদের সঙ্গেও কথা বলা হবে।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিজেপির বিরোধিতায় ইউপিএর শরিকদের মধ্যে কিছুটা বিভাজন দেখা গিয়েছিল। এবার দেখার, সরকার বিরোধিতায় ‘ফ্লোর কোঅর্ডিনেশন’ হয় কি না।