অবশেষে কুষ্টিয়ার খোকসার সেই ছাত্রলীগ সভাপতি সায়েম হোসেন সুজনকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। শনিবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস. এম. জাকির হোসেন সাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়।
উল্লেখ্য গত বুধবার বিয়ের দাবিতে ছাত্রলীগের সভাপতি সুজনের বাড়িতে অবস্থান নেয় যুবলীগ নেতার সাবেক স্ত্রী লিমা। জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে আবু উবাইদা শাফি জেলে থাকাবস্থায় লিমার সঙ্গে সায়েম হোসেন সুজনের বন্ধুত্ব হয়। কিছু দিন পর সেটি পরিণত হয় পরকীয়ায়। সম্প্রতি দুজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ে। নিজ দলের নেতার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কটি জানাজানি হলে গত জানুয়ারি মাসে শাফি তালাক দেন লিমাকে। এর পর লিমা ঢাকার কেরানীগঞ্জে তার বাবার বাড়িতে চলে যান।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি খোকসা উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় বিয়ের দাবিতে সায়েম হোসেন সুজনের বাড়িতে অবস্থান নেন লিমা। স্থানীয় থানা থেকে কোনো সহযোগিতা করা হচ্ছে না। অভিযোগও গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। উল্টো সুজনকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে পুলিশ। জানা যায়, যুবলীগ নেতা শাফির সঙ্গে প্রায় ১২ বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে লিমার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে লাব্বিব মাহমুদ লিপু (১০) নামে একটি ছেলেসন্তানও রয়েছে।
সংসার ভাঙার পর সুজনকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন লিমা। কিন্তু সুজন বিয়ে না করে নানা তালবাহানা করেন। গত সপ্তাহে সুজন বিয়ে করতে পারবেন না বলে লিমাকে জানিয়ে দেন। উপায় না পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় লিমা চুনিয়াপাড়ায় সুজনের বাড়িতে চলে আসেন।
লিমা জানান, সুজনের সঙ্গে দুই বছর ধরে তার সম্পর্ক চলে আসছে। এই সম্পর্কের কারণেই আগের সংসার ভেঙে গেছে। এখন সুজন বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই সুজনের বাড়িতে এ অবস্থায় আসতে হয়েছে। সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুজন বিয়ে না করলে তিনি এখানেই আত্মহত্যা করবেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকবার ধর্ষণ করা হয়েছে।
যুবলীগ নেতা শাফি জানান, সন্তানের কথা ভেবে আমি ওদের দুজনের কাছে অনুরোধ করলেও ওরা শোনেনি। বাধ্য হয়ে আমি ডিভোর্স দিয়েছি। ওরা যা খুশি করুক, এখন আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। সুজন তার চাচাতো ভাই শিল্পপতি মহিউদ্দিন রুবেলের প্রশ্রয় পেয়ে কাউকে কিছু মনেই করে না।
খোকসা থানার ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ দিতে আসেনি। আর এটি নিয়ে এত মাতামাতিরও কিছু নেই। উল্টো তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, অন্যের স্ত্রী কেন আরেকজনের বাড়িতে অনশন করবে? আগের স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের কথা বললে তিনি এর কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি। তবে সুজনের বাড়িতে থাকার সময় লিমা খোকসা থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম ও আবুল বাশারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান। সেখানে এ দুই এসআই তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ তার। সায়েম হোসেন সুজনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।