স্টিফেন হকিং বিস্ময়কর এক প্রতিভার নাম। তত্বীয় পদার্থবিদ্যার এই দিকপাল ৭৬ বছর বয়সে বুধবার মৃত্যুবরণ করেন।অনন্য প্রতিভাধর পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বিশ্বকে দিয়েছেন অনেক কিছু। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণার জন্য তার খ্যাতি জগতজুড়ে। মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য ‘বিগ ব্যাং থিউরি’র প্রবক্তাও তিনি। ১৯৮৮ সালে ‘এ ব্রিফ অব টাইম’ বইয়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে ওঠেন হকিং। সেখানে তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে তত্ত্ব দেন।
আইনস্টাইনের পর হকিংকে বিখ্যাত পদার্থবিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রিন্স অব অস্ট্রিয়ান্স পুরস্কার, জুলিয়াস এডগার লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার, উলফ পুরস্কার, কোপলি পদক, এডিংটন পদক, হিউ পদক, আলবার্ট আইনস্টাইন পদকসহ এক ডজনের বেশি ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি।
এত পুরস্কার, এত স্বীকৃতির পরও স্টিফেন হকিং নোবেল পুরস্কার পাননি। কেন পাননি এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। এ প্রসঙ্গে অনেক বিশেষজ্ঞই বলেছেন, হকিংয়ের তত্ত্ব যদিও সারা বিশ্ব গ্রহণ করেছে, কিন্তু নোবেল কমিটির স্বীকৃতি পেতে হলে যথেষ্ট পর্যবেক্ষণযোগ্য তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকায় দ্য সায়েন্স অব লিবার্টির লেখক টিমথি ফেরিস লিখেছিলেন, যদিও তত্ত্বীয় পাদার্থবিদ্যায় তার ব্ল্যাক হোল ও থিউরি যথেষ্টই প্রতিষ্ঠিত, তবুও তার এই তত্ত্ব প্রমাণ করার কোনো উপায় ছিল না। যদি কোনোভাবে তার সেই তত্ত্ব প্রমাণ করা যেতো তাহলে হয়তো তিনি নোবেল পেতেন। ফেরিস তার লেখায় আরও বলেন, এই তত্ত্ব প্রমাণ করা বর্তমানে প্রায় অসম্ভব। কারণ তারার আকারের প্রথম ব্ল্যাক হোল বিস্ফোরণে এখনও কয়েক লাখ কোটি বছর বাকি রয়েছে।
ভবিষ্যতে হয়তো এমন প্রযুক্তি বের হবে যার মাধ্যমে হকিংয়ের তত্ত্বগুলো প্রমাণ করা যাবে; কিন্তু হকিং থেকে যাবেন সকলের নাগালের বাইরে।