যুক্তরাজ্যের মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার কূটনীতিক বহিষ্কারের যে পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে, তার বিরুদ্ধে কড়া সতর্কতা দিয়েছে মস্কো। এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক আইনবিরুদ্ধ’ উল্লেখ তারা হুঁশিয়ার করে বলেছে, উস্কানিমূলক কার্যকলাপের জবাব না দিয়ে ছাড়বে না রাশিয়া। সোমবার (২৬ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশ থেকে ৬০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের পর মস্কোর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সের্গেই স্ক্রিপাল ইস্যুতে কোনো প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যের ‘ভণ্ডামির অবস্থান’ অন্ধভাবে অনুসরণ করছে কিছু দেশ। কিন্তু রাশিয়ান কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে যে উস্কানিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার জবাব না দিয়ে ছাড়বে না মস্কো।
গত ৪ মার্চ সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়েকে যুক্তরাজ্যের সলসবারির একটি পার্ক থেকে গুরুতর আহতাবস্থা উদ্ধার করা হয়। যুক্তরাজ্যের সন্দেহ, পক্ষত্যাগী স্ক্রিপাল ও তার মেয়েকে বিষক্রিয়ায় হত্যার অপচেষ্টার পেছনে রাশিয়া জড়িত। তারই জেরে প্রথমে ১৪ মার্চ ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। জবাবে ১৭ মার্চ সমানসংখ্যক ব্রিটিশ কূটনীতিক বহিষ্কার করে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই উত্তেজনার মধ্যে সবশেষ সোমবার ট্রাম্প ৬০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের পাশাপাশি সিয়াটলে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাস বন্ধ করে দেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ১৬টি রাষ্ট্র, ইউরোপের অন্য কয়েকটি দেশ এবং কানাডাও রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানায়।
তারই জবাবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের শামিল এবং এটা কেবলই আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে নষ্ট করবে, ব্যাহত করবে ঘটনার তদন্তকে।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, যেসব দেশ রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, তারা কেবল লন্ডনের হাতে (পুতুল হিসেবে) নেচেছে, যারা (লন্ডন) কার্যত ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা ছাড়া এবং প্রকৃত সহযোগিতা প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমানে অভিযোগ তুলে একপেশে, পক্ষপাতদুষ্ট ও ভণ্ডামিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে।
সত্য জানতে আগ্রহী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, লন্ডনকে বারবার অনুরোধ করলেও রাশিয়ার কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।
রাশিয়ার প্রভাবশালী সিনেটর ভ্লাদিমির জাবারভ বলেন, ওয়াশিংটনকে জবাব দিতে রাশিয়াও ৬০ মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করবে। এটা এখন স্পষ্ট যে পদক্ষেপটি হবে ‘টিট ফর ট্যাট’ (আঘাতের পাল্টা আঘাত), তারাও সমানসংখ্যক কূটনীতিককে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।