নাইজেরিয়ায় কোডিন নামে একরকম আফিমজাতীয় উপাদান-মেশানো কফ সিরাপ দিয়ে নেশা করাটা মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়েছে – এমন খবর বেরুনোর পর চারটি ওষুধ কোম্পনিতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সপ্তাহেই নাইজেরিয়া ওই কফ সিরাপ উৎপাদন এবং আমদানি নিষিদ্ধ করে।
বিবিসির এক তদন্তে দেখা যায়, দেশটির তরুণরা ওই সিরাপ কালোবাজার থেকে কিনছে এবং নেশা করার জন্য তা ব্যবহার করছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এই কোডিন কফ সিরাপের কারণে একটি নেশাসক্ত প্রজন্ম তৈরি হয়েছে নাইজেরিয়ায়। কোডিন মেশানো কফ-সিরাপকে মাদক হিসেবে ব্যবহার করা নতুন নয়। ভারত ও বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে এ সমস্যা দেখা গেছে।
ভারতে ফেন্সিডিল নামে এই একই ধরণের কফ সিরাপ মাদক হিসেবে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলে রিপোর্ট বেরুনোর পর ২০১৩ সালে বিহার রাজ্যে কর্তৃপক্ষ এর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। সে সময় ভারতের কর্তৃপক্ষ বলেছিল, এই ফেন্সিডিল প্রতিবেশী নেপাল ও বাংলাদেশে চোরাচালান হচ্ছে।
২০১৬ সালে ভারতে কোডিন কফ সিরাপের একাধিক ব্র্যান্ড মাদক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বলে রিপোর্ট বেরুনোর পর নিষিদ্ধ করা হয়। বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ চোরাচালান হওয়া হাজার হাজার বোতল ফেন্সিডিল বিভিন্ন সময় উদ্ধার করেছে, এবং এর সাথে জড়িত অনেককে গ্রেফতার করেছে। কোডিন এক ধরনের আফিমজাত ব্যথানাশক, কিন্তু এটা মানবদেহে নেশা তৈরি করে। বেশিমাত্রায় সেবন করলে এটা মানুষের স্কিৎসোফ্রেনিয়ার মত মানসিক রোগ এবং বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ার মত গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে।
কোডিন থেকে শুরু করে মরফিন এবং নিষিদ্ধ হেরোইন পর্যন্ত বিভিন্ন রকম ড্রাগ এই ওপিঅয়েড গোত্রের মধ্যে পড়ে। এই কোডিন সিরাপের নেশা এখন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। নাইজেরিয়া ছাড়াও কেনিয়া, ঘানা, নিজের এবং চাদে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।
তদন্তে আরো দেখা যায় বেশ কিছু ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কর্মচারীরা এই ওষুধটি অবৈধভাবে বিক্রি করছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর কালোবাজার কফ সিরাপের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।