একটা প্রশ্ন করি।
আগামী ৫০ বছর পর অকালে মানুষ মারা যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ কী হবে?
যুদ্ধ, বিগ্রহ, দুর্যোগ, এইডস, কলেরা, সোয়াইন ফ্লু….??
মোটেই না। যে কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাবে সেই কারণটা অনেক মানুষের কাছে অদ্ভূত লাগতে পারে। এমনকি কারো কারো কাছে অবিশ্বাস্যও মনে হবে।
এন্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স!
জিনিসটা কী?
জিনিষটা যতটা ভয়াবহ, ব্যাখা করা ততটাই সহজ।
তার আগে কয়েকটা পরিচিত দৃশ্যের কথা মনে করিয়ে দিই।
আপনার জ্বর হয়েছে। কিংবা শরীরের কোথাও ব্যথা।
বড় ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার ঔষধ দিলেন। ব্যথা তিন দিনেও কমে না। তারপরই শুনলেন অমুক ফার্মেসীতে বসা ক্লাস নাইন পাশ অমুক ডাক্তারের ঔষধ খেলেই রোগী ভালো হয়ে যায়। একদিনেই ব্যথা কমে।
আপনি গেলেন এবং তিন চারশ টাকার ঔষধ খেয়ে ভালো হয়ে গেলেন। তারপর পাড়ার বা মোড়ের চায়ের দোকানে বসে ডাক্তারের গোষ্ঠী উদ্ধারবশত আপনি সেই অমুক ডাক্তারের কেরামতির বিজ্ঞাপন দিলেন।
এটাও বলতে ভুললেন না এসব গরু ছাগল ডাক্তারের চেয়ে ফার্মেসীতে বসা অমুক ডাক্তার, তমুক ডাক্তার হাজার গুণ ভালো।
কেবল ফার্মেসী না। এমনও তো হয়, একজন ডাক্তারের ঔষধে ব্যথা কমছে না। আরেকজন ডাক্তার একদিনেই ব্যথা কমিয়ে দিলেন। ঔষধ হয়তো কিছুটা দামী দিয়েছেন। তাতে কী? ব্যথা তো কমেছে।
খুবই পরিচিত ঘটনা, তাই না?
কিন্তু আপনি জানেন না, একদিনে ব্যথা কমাতে গিয়ে আপনি বিষ খেয়ে ফেলেছেন। বিষ না, বিষের চেয়েও ভয়ানক জিনিস।
আপনি মারা যাওয়ার পথে এক পা বাড়িয়ে রেখেছেন।
বাংলাদেশের মানুষ মুখে মুখে বিজ্ঞাপনে চরম বিশ্বাসী। কেরামতি এবং মৌখিক স্বীকৃতিকে মাঝে মাঝে ধর্ম বিশ্বাসের মতোই বিশ্বাস করে বসে। তার উপর “আমি কি কম বুঝি” চিন্তাও একটা বিরাট বড় ফ্যাক্ট।
সামান্য জ্বর হলো। দৌড় দিয়ে ফার্মেসীতে গেলেন। দুইটা প্যারাসিটামল আর দুইটা এন্টিবায়োটিক কিনে হাসিমুখে ফিরে আসলেন।
পেট ব্যথা হলো। আবার ফার্মেসীতে দৌড়। ফার্মেসীওয়ালা দুই প্রজাতির চারটা এন্টিবায়োটিক দিল। ব্যথা সাথে সাথে শেষ। আপনি আকাশ পাতাল খুশি।
অথচ আপনি বুঝতে পারছেন না, বুঝতেই পারছেন না, আপনি ক্রমাগত বিষ খেয়েই যাচ্ছেন। এক পা একপা করে চলে যাচ্ছেন নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে।
ভূমিকা বাদ দিয়ে পুরোপুরি ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি।
জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের একমাত্র অস্ত্র হচ্ছে এন্টিবায়োটিক। বিজ্ঞানের এক অসামান্য মহান দান। আপনি সিপ্রো, জিমেক্স নামে যা চিনেন তা কেবল ঔষধ না, আপনার জন্য জীবনযুদ্ধের মহা হাতিয়ার।
কিন্তু এই হাতিয়ারের ব্যবহার বিধি আছে। যে কারো পরামর্শে আপনি হাতিয়ার হাতে নিতে পারবেন না। কখন কয়টা গুলি করবেন তারও নিয়ম আছে। শত্রু বুঝে গুলি করতে হবে। করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক, নির্দিষ্ট সময়ে। কারণ গুলি সংখ্যা সীমিত। যুদ্ধের নিয়মে গুলি না করলে গুলির অভাবে প্রতিপক্ষের হামলায় আপনি মারা যাবেন। এটাই তো নিয়ম হওয়া উচিত, তাই না?
এন্টিবায়োটিক হাতিয়ারের ক্ষেত্রে একই হিসেবে। এন্টিবায়োটিক নির্দিষ্ট কোর্সে খেতে হয়। একটা দুইটা করে নিজের ইচ্ছামতো খেলে আপনার শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। শরীরের জীবাণু এই ঔষধে পরিচিত হতে শুরু করবে। একটা সময় তারা আর এন্টিবায়োটিককে কেয়ার করবে না। নিজেরা এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। একটা সময় মহান এন্টিবায়োটিক হয়ে যাবে বিষহীন। আর কোন কাজ করবে না। আপনি নির্বিষ জ্বরে যে গুলি অপচয় করেছেন, প্রাণঘাতী কোন ইনফেকশনে গিয়ে বুঝবেন তার অভাব। শরীরের সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষা যখন ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন সবচেয়ে ছোট শত্রু, সবচেয়ে ছোট রোগটাই সহজে আপনাকে মেরে ফেলবে।
কখন কবে কোনটা খাবেন তার একমাত্র সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখেন একমাত্র ডাক্তার। ডাক্তার মানে আপনার বাড়ির পাশে তিন তাকের ফার্মেসীতে বসা এইট পাশ অমুক মিয়া না, ডাক্তার মানে কেবল এমবিবিএস, বিডিএস কিংবা যে কোন রেজিস্টার্ড ডাক্তার। এর বাইরে এন্টিবায়োটিক ব্যাপারে কারো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি আবার বলছি, দণ্ডনীয় অপরাধ।
হাঁ, আমাদের দেশে সব আইন মানা হয়না, সম্ভবও হয়না। হাতের কাছেই ডাক্তার পাওয়া যায় না। সে জন্য ফার্মেসীর সাহায্য নিতেই হয়।
কিন্তু এটা বলেই পার পাবেন এমন না। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ মানুষ ২০০ টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখানোর ক্ষমতা রাখেন। যারা পারেন না তাদের জন্য সরকারি হাসপাতাল আছে। সেখানে একটু কষ্ট করে দেখান।
রোগ বুঝে ঔষধ দেয়ার জন্য ডাক্তার লাগে না।
আসলেই বেশিরভাগ রোগের ঔষধ মুখে মুখে জানা আছে।
তাহলে এত কষ্ট করে ডাক্তার হওয়ারই বা কি দরকার? টাকা নষ্ট করে ডাক্তারের কাছে যাওয়ারই বা কি দরকার?
আর দরকার আছে।
ডাক্তার কোন রোগে কোন ঔষধ দেয়ার পাশাপাশি কোন সময় কোনটা দেয়া উচিত না এটা জানেন। সাধারণ মানুষ, ফার্মেসী বা কোয়াকরা (যারা ডাক্তার না হয়ে ডাক্তারের মতোই প্র্যাক্টিস করেন) এটা জানেন না। পার্থক্য আর প্রয়োজনীয়তা এখানেই।
এরপরও নিম্নবিত্ত মানুষকে তাদের ভুলের জন্য ছাড় দেয়া। তারা অনেক ক্ষেত্রেই অপরাগ। কিন্তু কোন যুক্তিতেই মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্তদের ছাড় দেয়া যায় না।
এলাকায় গেলে এক ডাক্তার ভাইয়ের চেম্বারে বসে আড্ডা দিই।
একদিন দেখলাম ঐ ভাই এক ফার্মেসীওয়ালার বিরুদ্ধে বিচার বসিয়েছেন। কারণ ঐ লোক প্রেসক্রিপশনের ঔষধ চেঞ্জ করে ফেলে। কোম্পানী না, ডিরেক্ট গ্রুপ চেঞ্জ।
কি রকম চেঞ্জ একটা উদাহরণ দিই।
একবার এফসিপিএস স্যার এক রোগীকে দুইটা এন্টিবায়োটিক আর একটা ওমিপ্রাজল দিলেন। ফার্মেসীওয়ালা ওমেপ্রাজল বদলে আরেকটা এন্টিবায়োটিক দিল।
তিনটা এন্টিবায়োটিক, ওমিপ্রাজল বা গ্যাসের ঔষধ নেই।
এটা গলা টিপে মারার চেষ্টার চেয়েও ভয়ানক।
ভুল উচ্চবিত্তরাও অনেক সময়েই করে থাকেন।
আমার পরিচিত অনার্স পড়ুয়া এক ছোট বোনের কানে ব্যথা। আমি পরের দিনই ইএনটি ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দিলেন। উচ্চশিক্ষিত আঙ্কেল ঘটনা শুনলেন এবং দৌড় মেরে উনার পরিচিত ফার্মেসীতে চলে গেলেন। ফার্মেসীতে বসে চা খেয়ে তিনটা এন্টিবায়োটিক আর একটা পেইন কিলার সমেত ৮০০ টাকার ঔষধ নিয়ে ফিরলেন।
ব্যথা একদিনেই উড়ে চলে গেল।
তবে সমস্যা রোগীর শরীর দুর্বল হয়ে গেছে। খেতেও পারছে না।
ঔষধের নাম শুনে আমি সাথে সাথে ডাক্তার দেখানোর জন্য বললাম। স্যার বকাবকি করে দুইটা এন্টিবায়োটিক কমিয়ে দিলেন। ৪০০ টাকা ভিজিটের সাথে ১৫০ টাকার ঔষধ। টোটাল ৫৫০ টাকা।
অথচ ফার্মেসীতে গিয়ে ডাক্তারের ৪০০ টাকা বাঁচানোর জন্য উল্টো আরো ২৫০ টাকা বেশি দিতে হলো।
এই ঘটনা কিন্তু বারবার ঘটে।
যে রোগে ডাক্তার সর্বোচ্চ ২০০ টাকার ঔষধ দিতেন সেখানে ৪০০-৫০০ টাকা বাঁচানোর জন্য মানুষ ফার্মেসী থেকে ১০০০ টাকার বিষ কিনে নিয়ে আসে।
আরেকটা ঘটনা। প্রায় ১০ বছর আগের।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ভাই কোয়াক ডেন্টিস্টের কাছে গেলেন। বিডিএস বিহীন ডেন্টিস্ট। কোয়াক চোখ বন্ধ করে দাঁত তুলল। তারপর একটা এন্টিবায়োটিক আর একটা পেইন কিলার দিল। কোন ওমিপ্রাজল নেই। এমনকি পেইন কিলার যে খালি পেটে খাওয়া যায় না সেটাও বলে দিল না।
গভীর রাতে ব্যথা শুরু হলে ভাই পেইন কিলার খেলেন। খালি পেটেই। দুই তিন পর পেট ফুলে গেল। অহস্য যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হলেন!
এরকম কেস স্ট্যাডি হাজারটা।
আপনিও প্রত্যক্ষ করেছেন, জানেন কিংবা শুনেছেন।
একদম সিরিয়াসলিই আমরা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছি। মিছিল সহকারে, কোন বিকার ছাড়াই।
মুড়ির মতো যখন তখন এন্টিবায়োটিক খাওয়া আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের কোন ধারণা নেই। একটা তথ্যই জেনে রাখুন, এই এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কারণেই প্রতি বছর সাত লাখ মানুষ মারা যায়!
তিন বছর আগে আমার ভাইরাল জ্বর হলো। ৭ দিন পরও জ্বর না কমার কারণে আমাদের মেডিসিন আরপি স্যারকে বললাম, স্যার এন্টিবায়োটিক দেন, প্লিজ। কেবল প্যারাসিটামল খেয়ে কমছে না।
স্যার বললেন, চড় দেব? সাহস কম না, আমার কাছে এন্টিবায়োটিক চায়!!
সেদিন কথাটা শুনে যতটা খারাপ লেগেছিল আজকে সেই কথার প্রয়োজনীয়তা তত বেশি বুঝতে পারছি।
আরেকজন স্যারকে সে দিন শুনলাম বারবার আফসোস করে বলছেন “সিপ্রো এত সুন্দর একটা ঔষধ। কিন্তু মানুষ নষ্ট করে দিল। এত ভালো একটা ঔষধ। ইস!
স্কুল পালিয়ে ১০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে দুই তাকের একটা ফার্মেসী খোলা ছেলে কেবল “এন্টিবায়োটিক” নামের বিষ বিক্রি করে পুরো ফ্যামেলী চালাতে পারে।
খেয়াল করেছেন এটা?
সব ব্যবসাতে মার খাওয়ার সিস্টেম থাকলেও ফার্মেসী ব্যবসায় কেউ মার খায় না। একমাত্র কারণ এন্টিবায়োটিক বিক্রি।
ঔষধ বিক্রি মহান ব্যবসা। আমি ফার্মেসীওয়ালা খাটো করছি না বা অসম্মানও করছি না। ঔষধ জীবনদায়ী।
কিন্তু আমাদের অজ্ঞতা আর ফার্মেসীওয়ালাদের লোভ সাথে কোয়াক ডাক্তারদের যা খুশি করার কারণে জাতি মহাবিপর্যয়ের দিকেই যাচ্ছে।
আর হাঁ, কেবল ফার্মেসী বা কোয়াকদের দায় দিয়েই শেষ না। দায় আছে ডাক্তারদের, দায় আছে সরকারেরও।
এখনো গ্রাম পর্যায়ে ডাক্তারসংখ্যা মানুষের তুলনায় নিতান্তই অপ্রচুল। সরকারি হেলথ কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল এত বিশাল জনগোষ্ঠীকে কাভার করতে পারছে না। নিতান্ত নিম্নবিত্ত মানুষ জ্বর বা পেটে ব্যথার জন্য পুরো একটা দিনের কাজ কর্ম বাদ দিয়ে (কাজ বাদ দিলে ভাত নেই) যাতায়াত ভাড়া দিয়ে ঔষধ আর টেস্ট করানোর টাকার ঝুঁকি নিয়ে সরকারি হেলথ কমপ্লেক্সে লাইন দিয়ে ডাক্তার দেখাবে এটা আসলেই অসম্ভব ব্যাপার। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের পক্ষে সময় আর দূরত্বও একটা প্রশ্ন। তার উপর আছে টেস্টের টাকার সীমাহীন আতংক।
এখানে সরকারের ভূমিকা রাখা উচিত। কী ভূমিকা সেটা বলতে পারছি না। তবে দেশের একটা বড় জনগোষ্ঠীকে মৃত্যু ঝুঁকিতে রেখে আমরা নিশ্চয়ই মধ্যম আয়ের দেশ হতে পারি না। পোস্টারে এন্টিবায়োটিক সচেতনতা আবদ্ধ থাকলে তার সুফল নিরক্ষর মানুষটি পাবে না। দেয়ালের পোস্টার দেখার সময় বা মানসিকতা যে মানুষ গোষ্ঠীর নেই, তারাও রয়ে যাবে হিসেবের বাইরে। কাজ করতে হবে একদম মাঠ পর্যায়ে। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে এই বার্তা। কঠিন কাজ, তবে নিশ্চয়ই অসম্ভব নয়।
তারও আগে পর্যাপ্ত ডাক্তার নিয়োগ করতে হবে। কেবল নিয়োগ করেই শেষ না, সে সব ডাক্তার দ্বারা মানুষ সত্যিই সেবা পাচ্ছে কিনা তার তদারকিও থাকতে হবে ঠিকঠাক।
কিছু কিছু ডাক্তারও নাম যশ বৃদ্ধির জন্য অবাধে এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। জেনে শুনে মানুষকে এভাবে যারা বিপদে ফেলছেন, তারা নিশ্চয়ই শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।
আপনি শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। যে রোগ ৩০ টাকা দামের দুইটা ট্যাবলেটেই কমে সেটাই আপনার জন্য মরণব্যাধী। কোন ঔষধ তখন কাজ করছে না। সেই মুহুর্তে পৃথিবীর সব ডাক্তার না, সব হাসপাতাল গিলিয়ে খাওয়ালেও আপনি ভালো হবেন না। খুব সহজেই ধীরে ধীরে মারা যাবেন। আপনার কোন দোষ না, বদঅভ্যাস না..সামান্য অজ্ঞতার কারণেই…
ভয় লাগে না?
চলছে এন্টিবায়োটিক সপ্তাহ। মানবজাতির সামনে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিক কারণেই বাঙালী জাতির চ্যালেঞ্জ আরো বড়।
এতবড় পোস্ট দিয়ে আপনাকে কতটা ভাবাতে পারলাম জানি না। সমস্যা নীরব, বিষের প্রভাব ধীর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মারা যাওয়ার কারণ অাজানা থাকার কারণে কারো কোন মাথা ব্যথা সৃষ্টির প্রয়োজন পড়ে না।
তারপরও আপনার হাতে ধরে পায়ে পড়ে করা অনুরোধ…কোন স্বীকৃত ডাক্তার ছাড়া কারো কাছ থেকে এন্টিবায়োটিক নেবেন না। নিজে নিজে এন্টিবায়োটিক কিনতে যাবেন না। কোর্স শেষ না করে খাওয়া বন্ধ করবেন না। ফেসবুকে যারা এই লেখা পড়বেন, তারা কেউ সমাজের নিম্নশ্রেণীর নিরক্ষর নিরুপায় মানুষ, এটা বিশ্বাস করি না। সুতরাং আপনাকে সচেতন হতেই হবে, আপনার ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই।
আর দয়া করে এমবিবিএস, বিডিএস… ডিগ্রি ছাড়া কারো বিরাট বড়বড় ডিগ্রি দেখে বিভ্রান্ত হবেন না।
এই দুইটা ডিগ্রি ছাড়া কোন বড় ডিগ্রি কম ভিজিট দেখে যদি আপনি চেম্বারে ঢুকে পড়েন, তাহলে আপনি ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছেন।
বাঁচতে হলে জানতে হবে, মানতেও হবে। না মানার আর কোন সুযোগ নেই। আপনার জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা “এন্টিবায়োটিক” সম্পর্কে সচেতন হোন। একবিংশ শতাব্দির মানুষদের আত্মহত্যা করা মানায় না।
লেখকঃ জয়নাল আবেদীন
চিকিৎসক, লেখক