“বাউলা কে বানাইলো রে
হাসন রাজারে
বাউলা কে বানাইলো রে”
ধর্মবর্ণ,জাতি-গোষ্ঠি,দেশের সীমানা বা লিঙ্গের ভেদাভেদের উর্দ্ধে আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ এবং সকল মানুষের একটা ধর্ম রয়েছে “মানবতা”। আধ্যাত্মিক বা মরমি সাধনা হচ্ছে মানবতার আরেক রূপ।
যে রূপে পাগল হয়ে ভোগবিলাসে ডুবে থাকা অত্যাচারী জমিদার “হাসন রাজা” হয়ে উঠেছিলেন আত্মাধিক বাউল,মরমি কবি ও জনদরদী জমিদার।

সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রী পরগণার তেঘরিয়া গ্রামে দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ও মোসাম্মৎ হুরমত জান বিবির ঘর আলোকিত করে ৭ পৌষ ১২৬১ ও ২১ ডিসেম্বর ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে এই মরমিয়া কবির জন্ম হয়। আলী রাজা চৌধুরীর দুই ছেলে সন্তানের মধ্যে হাসন ছিলেন ছোট এছাড়াও তার একটি কন্যা সন্তান ছিল।
হাসন রাজার পূর্বপুরুষেরা হিন্দু ছিলেন। তারা ভারতের উত্তর প্রদেশের অয্যোধ্যার অধিবাসি ছিলেন।তাদেরই মাঝে একজন বীরেন্দ্রচন্দ্র সিংহদেব মতান্তরে বাবু রায় চৌধুরী সিলেটে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সিলেট আসার আগে তারা দক্ষিণবঙ্গের যশোর জেলার কাগদি গ্রামের অধিবাসী ছিলেন । এজন্যই হাসন রাজার অনেক গানে ও কবিতায় হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক মিলবন্ধন দেখা যায়।
এই মরমি কবি কখনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন নি। তবে তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত। সহজ-সরল সুরে আঞ্চলিক ভাষায় প্রায় সহস্রাধিক গান ও কবিতা রচনা করার পাশাপাশি তিনি ছিলেন আরবী ও ফার্সি ভাষায় বিশেষ ভাবে দক্ষ। তৎকালীন সময়ে সিলেটে আরবী ও ফার্সির প্রবল চর্চা চলত।
১৮৬৯ সালে মাত্র চল্লিশ দিনের ব্যবধানে তার পিতা আলী রেজা চোধুরী ও তার বড় ভাই ওবায়দুর রেজা চৌধুরী মারা যান। মাত্র ১৫ বছর বয়সে উত্তরাধিকার সুত্রে জমিদার হিসাবে অভিষিক্ত হোন হাসন রাজা।
হাসন রাজা দেখতে সুদর্শন ছিলেন। মাজহারুদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, “বহু লোকের মধ্যে চোখে পড়ে তেমনি সৌম্যদর্শন ছিলেন। চারি হাত উঁচু দেহ, দীর্ঘভুজ ধারাল নাসিকা, জ্যোতির্ময় পিঙ্গলা চোখ এবং একমাথা কবিচুল পারসিক সুফী কবিদের একখানা চেহারা চোখের সম্মুখে ভাসতো।“
যৌবনে হাসন রাজা চরম মাত্রায় ভোগবিলাসী ও সৌখিন ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি অনেক নারীর সাথে মেলামেশা করেছেন। নারী সম্ভোগে তিনি ছিলেন অক্লান্ত। তার এক গানে তিনি নিজেই উল্লেখ করেছেনঃ-
“সর্বলোকে বলে হাসন রাজা লম্পটিয়া”
প্রতিবছর বিশেষ করে বর্ষাকালে নৃত্য-গীতের ব্যবস্থাসহ তিনি নৌকায় চলে যেতেন এবং বেশ কিছুকাল ভোগ-বিলাসের মধ্যে নিজেকে নিমজ্জিত করে দিতেন। এর মধ্যেই বিশেষ বিশেষ মুহুর্তে তিনি প্রচুর গান রচনা করেছেন, নৃত্য এবং বাদ্যযন্ত্রসহ এসব গান গাওয়া হত।
আশ্চর্যের বিষয় হল, এসব গানে জীবনের অনিত্যতা সম্পর্কে, ভোগ-বিলাসের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে নিজেকে স্মরন করিয়ে দিয়েছেন-
“নেশা লাগিলো রে
বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিলো রে
হাসন রাজা পেয়ারীর প্রেমে মজিলো রে”
আশ্চর্যের বিষয় হল, এসব গানে জীবনের অনিত্যতা সম্পর্কে, ভোগ-বিলাসের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে নিজেকে স্মরন করিয়ে দিয়েছেন।
হাসন রাজা পাখি ভালোবাসতেন। ‘কুড়া’ ছিল তার প্রিয় পাখি। তিনি ঘোড়া পুষতেন। তাঁর প্রিয় দুটি ঘোড়ার নাম ছিল জং বাহাদুর এবং চান্দমুশকি।এই ভাবে হাসন রাজার মোট ৭৭টি ঘোড়ার নাম পাওয়া গেছে। এছাড়াও হাসন রাজার আরো একটা মজার শখ ছিল ছোটছোট ছেলে মেয়েদের জড়ো করে রূপার টাকা ছিটিয়ে দেয়া হত বাচ্চারা যখন কাড়াকাড়ি করে কুড়িয়ে নিত,তা দেখে তিনি খুব মজা পেতেন।
এমনি ভোগবিলাস ও সৌখিনতার মধ্য দিয়ে দাপটের সাথে চলছিল হাসনের জমিদারী। আনন্দ বিহারে সময় কাটানোই হয়ে উঠছিল তাঁর জীবনের একমাত্র বাসনা। তিনি প্রজাদের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে লাগলেন। অত্যাচারী আর নিষ্ঠুর রাজা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে উঠলেন।
১৮৯৭ সালের ১২ জুন আসাম ও সিলেট এলাকায় ৮.৮ রিখটার স্কেলের এক ভয়াভয় ভূমিকম্প হয় যাতে মানুষ সহ অনেক পশুপাখি প্রাণ হারায়। হাসনের নিজের কুড়ে ঘরটিও ভেঙ্গে যায়। এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দেখলেন তার নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। খাদ্যের অভাবে হাসনের প্রাণপ্রিয় অনেক পশু পাখির মৃত্যু তাঁর মনে জীবন সম্পর্কে কঠিন বৈরাগ্যের সূচনা করে।
তারপর হঠাত করেই শেষ হয়ে যায় ভোগবিলাস ও সৌখিনতার অধ্যায়। প্রচলিত আছে এক আধ্যাত্নিক স্বপ্ন দেখার পর হাসন রাজার জীবন দর্শন আমূল পরিবর্তন হয়ে যায়।হাসন রাজার মনের দুয়ার খুলে যেতে থাকে। তাঁর চরিত্রে এসে যায় সৌম্যভাব। বিলাস প্রিয় জীবন ছেড়ে দেন তিনি। ভুল ত্রুটিগুলো শুধরাতে শুরু করেন। জমকালো পোশাক পড়া ছেড়ে দেন। নিয়মিত প্রজাদের খোঁজ খবর রাখা শুরু করেন । এলাকায় বিদ্যালয়, মসজিদ এবং আখড়া স্থাপন করেন। শুধু বহির্জগত নয়, তাঁর অন্তর্জগতেও আসে বিরাট পরিবর্তন। বিষয়-আশয়ের প্রতি তিনি নিরাসক্ত হয়ে উঠেন। তাঁর মনের মধ্যে আসে এক ধরনের উদাসীনতা। এক ধরনের বৈরাগ্য। তিনি আল্লাহ্র প্রেমে মগ্ন হলেন। তাঁর সকল ধ্যান ধারণা গান হয়ে প্রকাশ পেতে শুরু করলো। তিনি লিখলেন –
“লোকে বলে বলেরে, ঘর বাড়ি ভালা নায় আমার
কি ঘর বানাইমু আমি, শূন্যের-ই মাঝার
ভালা করি ঘর বানাইয়া, কয় দিন থাকমু আর
আয়না দিয়া চাইয়া দেখি, পাকনা চুল আমার।“
এভাবে প্রকাশ পেতে লাগলো তাঁর বৈরাগ্যভাব। হাসন রাজা সম্পূর্ণ বদলে গেলেন। জীব-হত্যা ছেড়ে দিলেন। কেবল মানব সেবা নয়, জীব সেবাতেও তিনি নিজেকে নিয়োজিত করলেন। যে এক সময় মানুষের কাছে “চন্ড হাসন” নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। সেই তিনিই এবার হলেন “নম্র হাসন”। তিনি তার এক গানে আক্ষেপের সাথে বলেছেন-
“ও যৌবন ঘুমেরই স্বপন
সাধন বিনে নারীর সনে হারাইলাম মূলধন”
হাসন রাজা তার চিন্তা-চেতনা,জীবন দর্শন সবকিছুই গানের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।

অনুমান করা হয় তিনি হাজারেরও বেশী গান রচনা করেছেন। যার মধ্যে ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে ২০৬টি গানের সংকলন প্রকাশিত হয় “হাসন উদাস” নামে। এছাড়াও রাজার তিনপুরুষ’ এবং ‘আল ইসলাহ্’ সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় কিছু গান প্রকাশিত হয়েছে। শোনা যায়, হাসন রাজার উত্তরপুরুষের কাছে তাঁর গানের কিছু পান্ডুলিপি আছে। ধারণা করা হয়, তাঁর অনেক গান এখনো সিলেট-সুনামগঞ্জের লোকের মুখে মুখে আছে এবং বহু গান বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ‘স্ত্রীলোক, ঘোড়া ও কুড়া পাখির আকৃতি দেখে প্রকৃতি বিচার’ বিষয়ের উপর হাসন রাজার আরেকটি গ্রন্থ হচ্ছে “সৌখিন বাহার”।
এ পর্যন্ত পাওয়া হাসন রাজার সর্বমোট গানের সংখ্যা ৫৫৩টি।
‘হাসন বাহার’ নামে তাঁর আর একটি গ্রন্থ কিছুকাল পূর্বে আবিস্কৃত হয়েছে। হাসন রাজার আর কিছু হিন্দী গানেরও সন্ধান পাওয়া গেছে।
আত্মাধিক ধারা অনুসরণ করেই হাসনের প্রায় সকল গান রচিত। ঈশ্বানুরক্তি, জগৎ জীবনের অনিত্যতা ও প্রমোদমত্ত মানুষের সাধন-ভজনে অক্ষমতার খেদোক্তিই তাঁর গানে প্রধানত প্রতিফলিত হয়েছে। কোথাও নিজেকে দীনহীন বিবেচনা করেছেন, আবার তিনি যে অদৃশ্য নিয়ন্ত্রকের হাতে বাঁধা ঘুড়ি সে কথাও ব্যক্ত হয়েছে-
“গুড্ডি উড়াইল মোরে,মৌলার হাতের ডুরি।
হাসন রাজারে যেমনে ফিরায়, তেমনে দিয়া ফিরি।।
মৌলার হাতে আছে ডুরি, আমি তাতে বান্ধা।
জযেমনে ফিরায়, তেমনি ফিরি, এমনি ডুরির ফান্ধা”
এই যে ‘মৌলা’ তিনিই আবার হাসন রাজার বন্ধু। স্পর্শের অনুভবের যোগ্য কেবল, তাঁর সাক্ষাৎ মেলে শুধুমাত্র তৃতীয় নয়নে-
“আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে, আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে।
আরে দিলের চক্ষে চাহিয়া দেখ বন্ধুয়ার স্বরূপ রে।”
কিন্তু এই বন্ধুর সনে রাজার প্রেমের আশা বাঁধা পেত স্বজন ও সংসার। তাই তো গৌতম বুদ্ধের মতোই বলেন-
“স্ত্রী হইল পায়ের বেড়ি পুত্র হইল খিল।
কেমনে করিবে বন্ধের সনে মিল”
আত্মাধিকবাদ বা মরমী সাধনার বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে জাতধর্ম আর ভেদবুদ্ধির উপরে উঠা। সকল ধর্মের নির্যাস, সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যই আধ্যাত্ন-উপলব্ধির ভেতর দিয়ে সাধক আপন করে নেন। তাঁর অনুভবে ধর্মের এক অভিন্ন রূপ ধরা পরে- সম্প্রদায় ধর্মের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে সর্বমানবিক ধর্মীয় চেতনার এক লোকায়ত ঐক্যসূত্র রচনা করে। রাজার সঙ্গীত, সাধনা ও দর্শনে এই চেতনার প্রতিফলন আছে।
একদিকে বলেছেন-
“আমি যাইমুরে যাইমু, আল্লার সঙ্গে,
হাসন রাজায় আল্লা বিনে কিছু নাহি মাঙ্গে”
আবার অপর পাশেই তিনি বলেছেন-
“আমার হৃদয়েতে শ্রীহরি,
আমি কি তোর যমকে ভয় করি।
শত যমকে তেড়ে দিব, সহায় শিবশঙ্করী।”
হাসন রাজা কোন পন্থার সাধক ছিলেন তা স্পষ্ট জানা যায় না। তাঁর পদাবলীতে কোন গুরুর নামোল্লেখ নেই। কেউ কেউ বলেন তিনি চিশ্তিয়া তরিকার সাধক ছিলেন। সূফীতত্ত্বের প্রেরণা ও প্রভাব তাঁর সঙ্গীতে ও দর্শনে থাকলেও, তিনি পুরোপুরি এই মতের সাধক হয়তো ছিলেন না। নিজেকে তিনি ‘বাউলা’ বা ‘বাউল’ বলে কখনো কখনো উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি বাউলদের সমগোত্রীয় হলেও নিজে আনুষ্ঠানিক বাউল ছিলেন না। সূফীমতের সঙ্গে দেশীয় লোকায়ত মরমীধারা ও নিজস্ব চিন্তা-দর্শনের সমন্বয়ে তাঁর সাধনার পথ নির্মিত হয় বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। তাঁর সঙ্গীতরচনার পশ্চাতে একটি সাধন-দর্শনের প্রভাব বলা যায়।
১৯ ডিসেম্বর ১৯২৫ Indian Philosophical Congress এর প্রথম অধিবেশনে হাসন রাজা সম্পর্কে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন “পূর্ববঙ্গের এক গ্রাম্য কবির [হাসন রাজা] গানে দর্শনের একটি বড় তত্ত্ব পাই সেটি এই যে, ব্যক্তিস্বরূপের সহিত সম্বন্ধ সূত্রেই বিশ্ব সত্য”। তিনি গাহিলেন-
“মম আঁখি হইতে পয়দা আসমান জমিন
শরীরে করিল পয়দা শক্ত আর নরম
আর পয়দা করিয়াছে ঠান্ডা আর গরম
নাকে পয়দা করিয়াছে খুসবয় বদবয়।“
এই সাধক কবি দেখিতেছেন যে, শাশ্বত পুরুষ তাঁহারই ভিতর হইতে বাহির হইয়া তাঁহার নয়নপথে আবির্ভূত হইলেন। বৈদিক ঋষিও এমনইভাবে বলিয়াছেন যে, যে পুরুষ তাঁহার মধ্যে তিনিই আধিত্যমন্ডলে অধিষ্ঠিত।
“রূপ দেখিলাম রে নয়নে, আপনার রূপ দেখিলাম রে।
আমার মাঝত বাহির হইয়া দেখা দিল আমারে।“
এছাড়াও ১৯৩০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিবার্ট লেকচারে’ রবীন্দ্রনাথ The Religion of Man নামে যে বক্তৃতা দেন তাতেও তিনি হাসন রাজার দর্শন ও সঙ্গীতের উল্লেখ করেন।
১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীতে তাঁর মায়ের কবরের পাশে কবর দেওয়া হয়। তার এই কবরখানা তিনি মৃত্যুর পূর্বেই নিজে প্রস্তুত করেছিলেন।
হাসন রাজার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজারে গড়ে তোলা হয়েছে একটি জাদুঘর, যার নাম ‘মিউজিয়াম অব রাজাস’। এখানে দেশ বিদেশের দর্শনার্থীরা রাজা ও তার পরিবার সম্পর্কে নানা তথ্য জানতে প্রতিদিন ভিড় করেন।


এছাড়াও, সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়ায় এলাকায় সুরমা নদীর কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে রাজার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি। এ বাড়িটি একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান। কালোত্তীর্ণ এ সাধকের ব্যবহৃত কুর্তা, খড়ম, তরবারি, পাগড়ি, ঢাল, থালা, বই ও নিজের হাতের লেখা কবিতার ও গানের পাণ্ডুলিপি আজও বহু দর্শনার্থীদের আবেগাপ্লুত করে।

লেখকঃ উজ্জল হুসাইন