মেক্সিকান রাষ্ট্রপতি এনরিক পিনা নিতো এবং অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবল এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর ফোনালাপের কপি গত বৃহঃস্পতিবার সকালে ওয়াশিংটন পোস্টে পাঠানো হয়।
উক্ত ফোনালাপে মেক্সিকো সীমান্ত প্রাচীর থেকে শুরু করে বোস্টন ম্যারাথনে বোমা হামলা সহ নাফটাতে কানাডার অংশগ্রহন ও নিউহ্যাম্পশায়ারের অপিওড সংকটের বিষয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের একজন মূখপাত্র মাইকেল এন্টন কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এই ফাঁস হওয়া ফোনালাপের সত্যতা যাচাই না করে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
নীচে উক্ত ফোনালাপ থেকে ট্রাম্পের কিছু উল্লেখযোগ্য উক্তি দেয়া হলো।
মেক্সিকান রাষ্ট্রপতি এনরিক পিনা নিতোর সাথে ফোনালাপে উঠে আসা ট্রাম্পের কিছু উক্তিঃ
১. “সাম্প্রতিক নির্বাচনে আমি হিস্প্যানিক ভোটারদের একটি বড় অংশের সমর্থনে জিতেছি। কিন্তু সামগ্রিকভাবে আমি ৩০% এর কিছু বেশী ভোট পেয়েছিলাম আর সেটা দেখে সবাই খুব অবাকও হয়েছিল। আমি এইসব হিস্প্যানিকদের বুঝতে পারি আর তারাও আমাকে বোঝে। এবং এইসাথে মেক্সিকান নাগরিকদের যথেষ্ট সম্মান করি।”
২. “আমাদের উচিত আরো সহজ কোন সমাধান বের করা। এবং সেই সমাধানটি হলো সীমান্তের ট্যারিফ। কারন ম্যাক্সিকোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ বিলিয়ন ডলারের বানিজ্য ঘাটতি রয়েছে।”
৩. “আমরা মিশিগান ও ওহাইয়োর অনেক গুলো ফ্যাক্টরি হারিয়েছি। আর আমি এই দুই স্টেট এ জিতেসি যেখানে গত ৩৮ বছরে কোন রিপাবলিকান প্রার্থী জিততে পারে নি। তাই তারা রাস্তায় উৎসব করছে। আপনার অইদিকেও মে বি রাস্তায় উৎসব চলছে তবে তা বিপরীতমুখী।”
৪. “এটি একটি আলাদা বিষয়। কানাডার সাথে আমাদের যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। এবং সেই সম্পর্কটি যথেষ্ট সুষম ও ন্যায্য। তাই কানাডার ব্যাপারে আমাদের চিন্তার কিছু নেই আর এসব নিয়ে আমরা ভাবিও না।”
৫. “নিউ হ্যাম্পশায়ারে আমি জিতেসি। কারন নিউ হ্যাম্পশায়ার একটি মাদকের আখড়া আর সেই মাদক আসে দক্ষিন সীমান্ত হতে।”
৬. “ম্যাক্সিকোতে আপনার কিছু কঠিন সমস্যা রয়েছে যেগুলো নিরসনে আমরা আপনার সহায়তা করতে পারি। সেইসব সমস্যা গুলোকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়া উচিত কিন্তু আপনি তা করতে সমর্থ হননি।”
৭. “বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি সেটা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও ডলার বা পেসোর হিসেবে কোন গুরুত্ববহন করে না।”
৮.“আপনি এইসব কথা গুলো প্রেসকে বলবেন না। কারন তারা এ নিয়া হাঙ্গামা করবে আর সেটা আমার পছন্দ না। আপনি এইজন্য এগুলো প্রেসকে জানাবেন না কারন তারা যে পরিস্থিতি তৈরি করবে তাতে আমরা কোন ফলপ্রসূ আলোচনা করতে পারবো না।”
৯. “শুধুমাত্র আপনি আর আমি – পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে। ভুলবেন না যেন, এনরিক।”
১০. “আপনার কথাগুলো অনেক সুন্দর। শব্দ চয়ন অসাধারন। আমার মনে হয়না আমি এত সুন্দর করে বলতে পারবো। বিবৃতির শেষে এমন শব্দগুলো জুড়ে দিতে পারলে বেশ হতো। সত্যিই চমৎকার।”
অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথোপকথনে উঠে আসা ট্রাম্পের কিছু উক্তিঃ
১. “আমি এই বিষয়ে শুনেছি। আমাকে বলতেই হয়, আমি অস্ট্রেলিয়া কে ভালোবাসি তার জনগণকে ভালোবাসি। আমার অনেক অস্ট্রেলীয় বন্ধু রয়েছেন।”
২. “এটি একটি ভালো উপায়। আমাদেরও এটি করা উচিত। আপনি তো আমার চেয়েও খারাপ।”
৩. ” আমি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানুষ, যে নিজের দেশের অন্য কাউকে ঢোকার অনুমতি দিতে চাইনা। অথচ এখন আমাকে ২০০০ জন মানুষকে গ্রহণ করতে সম্মত হতে হয়েছে। এবং এটা আমাকে একটি দূর্বল অবস্থানে ফেলে দিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ হয় আমি এখানে এসেছি আর এই ব্যাপারটা আমাকে খারাপ অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে।”
৪. “আমি এইসব লোককে ঘৃণা করি। আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিচ্ছি তারা খারাপ। তাই এখনই তারা কারাগারে রয়েছে। তারা চমৎকার মানুষ হতে পারে না যারা স্থানীয় দুধ উৎপাদনের জন্য কাজ করে।”
৫. ” দেখুনা আমি জানিনা আপনি কিভাবে তাদের দিয়ে এমন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করিয়েছেন। কিন্তু এভাবেই তারা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। তারা বলেছিল যে ২৭০ পাওয়ার মতও কোন অবস্থান আমার ছিলো না কিন্তু আমি ৩০৬ টি পেয়েছি। এইসব চুক্তি গুলোর জন্যই তারা আজ নির্বাচন হেরেছে।”
৬. “ঠিক আছে, এটিতে আমাকে অসৎ দেখায় কিন্তু আমি তেমন নই এমনকি এটি আমি পছন্দও করি না। তবে যদি আমাকে এটি করতেই হয় তবে আমি তা করবো। আমি আপনার সাথে সৎ থাকতে চাই।”
৭. “কেউ কি জানে এই লোকগুলো কে বা কারা? তারা কোথা থেকে এসেছে? তারা যে আগামী পাচ বছর পর আবার কোন বোস্টন হামলাকারী হবে না তার কি নিশ্চয়তা? অথবা দুই বছর পর?কারা এরা?”
৮. “এদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাও। আমরা বাকী বিশ্বের জন্য ভাগাড়ের মত। আমি এখানে এসেছি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। এবং আমি এটা থামাতে চাই। এটা করায় আমাকে বোকা দেখাতে পারে। আমি জানি এটা আপনার জন্য ভালো হতে পারে কিন্তু আমার জন্য নয়। এটা আমার জন্য ভয়ানক।”
৯. “তারা যেখানেরই হোক।”
১০. “যথেষ্ট হয়েছে। আমি সারাদিন এইসব কল গুলো করেছি আর সব গুলোর মধ্যে এটা ছিল সবচে অপ্রীতিকর। পুতিনের কলটা এর থেকেও ভালো ছিলো। এটা পরিহাসের মত।”
সূত্রঃ সিএনএন
