আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে চালানো ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৫ জন নিহত এবং ১৫৮ জন আহত হয়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠি তালিবান এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি তালেবানের দ্বিতীয় দফা আত্মঘাতী হামলা।
বিবিসিসহ বেশ ক’টি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানায়, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের সময় আত্মঘাতী এই হামলাটি চালানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুরনো ভবনের ঠিক পাশেই। একটি অ্যাম্বুলেন্সকে এই হামলার কাজে ব্যবহার করে হামলাকারীরা। এসময় ওই স্থানে রাস্তায় বহু লোকের ভিড় ছিল। ঠিক পাশেই রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিস।এছাড়া এখানেই রয়েছে পুলিশের সদর দপ্তর এবং বহু দেশের দূতাবাস।
বিস্ফোণটি এতোই শক্তিশালী ছিল যে, আশপাশের একতলা স্থাপনাগুলো ধসে পড়েছে। এমনকি দুই কিলোমিটার দূরের বাড়িঘরও কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন ভযাবহ শক্তিশালী বিস্ফোরণ গত কয়েক বছরে হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সংবাদ মাধ্যমগুলোকে তাদের ভীতিকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন। তারা জানান, আত্মঘাতী হামলাটি যখন চালানো হয় তখন রাস্তাসহ পুরো এলাকাটি লোকে লোকারণ্য ছিল। ঠিক এমন সময়টাকেই হামলার জন্য বেছে নেয় জঙ্গিরা। একারণেই এতো বেশি সংখ্যক মানুষ আহত ও নিহত হয়েছে। বিস্ফোণস্থলে অসংখ্য মানুষকে আহত ও নিহত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। চারপাশে শুধু রক্ত আর মানুষের ছিন্নভিন্ন হাত-পা-মাথাসহ বিভিন্ন দেহাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। যা এককথায় ভযাবহ, লোমহর্ষক এবং নোরকীয়।
বিস্ফোণটা এতোই শক্তিশালী ছিল যে, শহরের সব স্থান থেকে আকাশে পেঁচিয়ে উঠতে থাকা ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায়।
হাসপাতালগুলো আহত আর নিহত মানুষে উপচে পড়ার যোগাড়। আহতদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালগুলো রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।
হামলাস্থলের সবচেয়ে সবচেয়ে কাছের হাসপাতালটির বারান্দার মেঝেতে শুইয়ে রাখা শিশু ও নারীসহ বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য আহত-রক্তাক্ত মানুষ যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে কাবুলের একটি বিলাসবহুল হোটেলে তালিবান জঙ্গিদের হামলায় ২২ জনের মৃত্যু হয়। তাদের বেশিরভাগই ছিল বিদেশি। তবে শনিবারের হামলায় কোনো ইউরোপীয় হতাহত হননি। তারা ‘সেফ জোনে’ রয়েছেন বলে জানা গেছে। রেড ক্রস এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে এই হামলা চালানোর ঘটনাকে ‘‘অগ্রহণযোগ্য’’ বলে আখ্যা দিয়েছে তারা।