আবারো নতুন সংঘাতের ছায়া পড়ল ভারত-চীন সম্পর্কে

0
ডেকোলাম

ভারত ও চীনের মধ্যে ডোকলাম সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘ সংঘাতের পর গতবছর জট কিছুটা খুলেছিল। কিন্তু ফের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ভারতের মনে। সম্প্রতি ভুটানকে প্রস্তাব দিয়েছে চীন- ডোকলামের ২৬৯ বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ড তারা নিতে চায়। বিনিময়ে দক্ষিণ চীনের পাসামলুং এবং জাকারলুং উপত্যকার ৪৯৫ কিলোমিটার জমি তারা ভুটানকে ছেড়ে দিতে তৈরি। এই দুটি ভূখণ্ডের দখল কার, তা নিয়েও মতভেদ রয়েছে চীন ও ভুটানের। প্রস্তাবটি নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও আলোচনা এগোচ্ছে দুদেশের মধ্যে।
ডেকোলাম
চীন যে ভূখণ্ডটি দখলে আগ্রহী, সেটি ভারতের শিলিগুড়ি করিডর থেকে খুবই কাছে। গত বছর এখানেই ভারত এবং চীনের সেনারা মুখোমুখি প্রায় তিন মাসেরও বেশি দাঁড়িয়েছিল। এই সংঘাতের ছায়া পড়ে ভারত-চীন সম্পর্কেও। ভারত কড়া কূটনীতি থেকে সরে এসে সমঝোতার পথে হাঁটায় সমস্যার জট কিছুটা ছাড়ে। কিন্তু ভারতের ঘাড়ের কাছে থাকা ওই ভূখণ্ডে চীনা সক্রিয়তা যে অদূর ভবিষ্যতে ফের ভারতের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে সে আশঙ্কাই গাঢ় হচ্ছে এখন।

ডোকলামের দখল নিতে চীন বহু দিন ধরেই সচেষ্ট। এই ভূখণ্ডের দখল পেলে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে নজরদারি বাড়ানোই শুধু নয়, অবস্থানগত অনেক সুবিধাও আদায় করে নিতে পারবে চীন। ৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের ঠিক পাঁচ বছর পর ওই অঞ্চলে ভারতীয় সেনার হাতে পর্যুদস্ত হতে হয়েছিল চিনের সেনাদের। তারও অনেক পরে ৮৬ সালের ‘অপারেশন ফ্যালকন’-এর মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারী চিনা সেনাকে ফেরত পাঠায় ভারত। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে রাস্তা বানানো অথবা সামরিক ঘাঁটি তৈরির জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে চলেছে চীন। কিন্তু সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকায় সুবিধা করতে পারেনি।

কিন্তু এবার অঞ্চলটি চীনের দখলে চলে গেলে ভারতকেও চীন সীমান্তে ততপরতা আরো বাড়াতে হবে। আসলে সম্প্রতি শুধু সীমান্তেই নয় বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে ভারত-চীন বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করছে। পাকিস্তান থেকে শুরু করে নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এবং এমনকি বাংলাদেশেও বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে চীনের প্রভাব উত্তোরত্তর বেড়ে চলেছে। যার ফলে ভারত ও মার্কিন জোট গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।