ইয়েমেনে সৌদি আরব সমর্থিত ও আরব আমিরাত সমর্থিত দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। রবিবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের আদেন শহরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এতে একই পক্ষে লড়াই করা বাহিনী দুটির মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়াবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আরব আমিরাত সমর্থিত দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সৌদি আরবের বিশ্বস্ত সরকারি বাহিনীর মধ্যে এটা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ। তারা একত্রে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করে আসছিল। এই ঘটনা তাদের সম্মিলিত চেষ্টাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, রবিবার আদেনের সবখানে বন্দুকধারীদের মোতায়েন করা হয়। সেখানে তুমুল গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে একটি সামরিক ঘাঁটি ও বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আর তাদের সমর্থনে অনেক লোক প্রধান সড়কে অবস্থান নেয়। সরকারকে পদত্যাগ করতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বেঁধে দেওয়া সময় সীমা রবিবার শেষ হওয়ার পর এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি সৌদি আরবে নির্বাসনে থাকলেও তার প্রশাসনই ইয়েমেনের পাঁচ ভাগের চার ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এখন আদেনের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতারা দক্ষিণ ইয়েমেনে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি করছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গত সপ্তাহে হাদি প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অদক্ষতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগের দাবি জানায়।
ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ বিন দাঘির দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এই পদক্ষেপকে অভ্যুত্থান উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ‘এই সামরিক সংঘর্ষকে হুথি ও ইরানের জন্য সরাসরি উপহার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আর প্রেসিডেন্ট হাদির শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলী আল মিকদাসি বলেন, বিদ্রোহের যে কোনও চেষ্টা দক্ষিণীদের শত্রু হিসেবে পরিণত করতে পারে।
এদিকে দক্ষিণীদের একজন জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক সূত্র অভিযোগ করেছে, সরকার সশস্ত্র শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে বিতর্ক উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই নেতা বলেন, ‘হাদি সরকার জনগণের বিক্ষোভ দেখে ভয় পেয়েছে। তাই তারা জোর করে এটাকে থামাতে চাইছে। তারা ভাবছে যুদ্ধ বাঁধলে জোটের সেনারা হস্তক্ষেপ করে তাদের রক্ষা করবে।’
ওই সংঘর্ষের আগে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট এক বিবৃতিতে সব পক্ষকে শান্ত থাকার ও ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানায়। বিবৃতিতে, বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বানও জানানো হয়।