ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলি এলাকার একটি বাসা থেকে সরকারী সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের এক শিক্ষিকা ও সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখার অডিট কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। নিহত ওই কলেজ শিক্ষিকার নাম সাজিয়া বেগম। তিনি সরকারী সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তিনি দুই ছেলে নিয়ে ওই ফ্লাটের পাশের ফ্লাটে থাকতেন।
তার স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি রাজধানীর সূত্রাপুর থানার বানিয়া নগর এবং ব্যাংক কর্মকর্তার নাম ফারুক হাসান। তার বাড়িও রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ৩৮ নং বাসা। ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ এফএম নাসিম ঘটনার সত্যতা বলেন, বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দিলে আমরা এসে লাশ উদ্ধার করি। দক্ষিণ ঝিলটুলি এলাকার নুর ইসলামের দ্বিতল বাড়ির নিচ তলার একটি ফ্লাট থেকে লাশ দুইটি উদ্ধার করা হয়।
শিক্ষিকার লাশ দরজার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় এবং ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ ফ্যানের হুকের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
বাড়ির মালিকের ছেলে ডেবিড বলেন, আজ রাজেন্দ্র কলেজের অভিষেক অনুষ্ঠানের কনসার্ট ছিল। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কনসার্ট শেষে বাড়ি ফিরে নিচ তলার ওই ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পাই। দরজার ফাঁকা দিয়ে দেখতে পাই ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ ঝুলছে। আমি সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
ডেবিড আরও জানান, নিহত কলেজ শিক্ষিকা ১ বছর আগে এই বাসা ভাড়া নেন। আর ব্যাংক কর্মকর্তা ১ মাস আগে ভাড়া নেন। ১ মাস আগে বাসা ভাড়া নিলেও তিনি থাকতেন না। দুই দিন আগে তিনি বাসায় এসে উঠেছেন। সরকারী সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুলতান মাহামুদ বলেন, ম্যাডাম আজ কলেজে গিয়েছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি কলেজ থেকে বাড়ির জন্য বের হয়ে যান। এরপর রাতে জানতে পারলাম ম্যাডামকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরে না পেয়ে থানায় যাই। ঠিক তখনই বাড়ির মালিকের ছেলে থানায় গিয়ে পাশের ফ্লাটে লাশ ঝুলে থাকার খবর দেয়। সেই লাশ উদ্ধার করতে এসে পুলিশ ম্যাডামের লাশও উদ্ধার করে। খবর পেয়ে আমরা শিক্ষকবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসি।
নিহত কলেজ শিক্ষিকার স্বামী শেখ শহিদুল ইসলাম জানান, বিকাল ৪টার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা হয়। তখন সে জানায় বাসায় আসছে। এর পর রাত হয়ে গেলেও বাসায় না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করি, তার কলিগদের জানাই। কোথায় খুঁজে না পেয়ে থানায় জানাই।