এখনকার রিয়াল মাদ্রিদ যেন ভাঙ্গা হাট। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কয়েক বছর আগেই বিদায় নিয়েছেন, সর্বশেষ মৌসুমশেষে বিদায় নিয়েছেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস ও কোচ জিনেদিন জিদান। এই তিনজনই ছিলেন গত এক দশকে ক্লাবের অধিকাংশ সাফল্যের কারিগর।
ক্লাবথেকে জিদান-রামোসদের বিদায় সমর্থকদের অনেকেই ভালোভাবে নেননি। কেউ কেউ সভাপতি পেরেজকে সরাসরি দোষারোপ করেছেন। জিদান তো ক্লাব ছাড়ার কারণ হিসেবে ক্লাব থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পাওয়া, প্রাপ্য সম্মান না পাওয়ার কথা সরাসরিই বলে গিয়েছেন খোলা চিঠি লিখে। রামোসও বিদায়বেলায় ক্লাবের প্রতি অভিমান প্রকাশ করেছেন।
এতদিন এসব ব্যাপারে সভাপতি কিছু না বললেও অবশেষে তিনি মুখ খুলেছেন। জিদান, রামোসসহ ক্লাবের আরো অনেক বিষয় নিয়ে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ওন্দা চেরো’র ত্রানসিস্তর অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন পেরেজ।
‘জিনেদিন জিদান ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হওয়ার স্বপ্ন দেখেন’, বলেছেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন একদিন জিদানের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।
জিদান ২০১৬-২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান কোচ ছিলেন। পদত্যাগের পর দলের অনুরোধে ২০১৮ সালে আবারো ক্লাবে ফিরে এসেছিলেন, তবে সর্বশেষ ২০২০-২০২১ মৌসুম শেষে তিনি পদত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে বর্তমানে ফরাসী জাতীয় দলের দ্বায়িত্বে রয়েছেন দিদিয়ের দেশম, যিনি ফ্রান্সকে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন।
“আমি জিদানকে ভালোভাবে জানি এবং আমি অবাক হইনি যে তিনি (প্রধান কোচের পদ) ছেড়ে দিয়েছেন। প্রধান কোচের জীবন খুব কঠিন। আমি এব্যাপারে তার সাথে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করেছি, তাকে রিয়ালে থাকার জন্য প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছি। তবে তার স্বপ্ন ফরাসী জাতীয় দলের দ্বায়িত্ব নেওয়ার এবং নিঃসন্দেহে একদিন তিনি তা অর্জন করবেন, ”স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমকে পেরেজ বলেছেন।
তিনি আরো বলেছেন যে, জিদান যদি ফিরে আসে তবে তারা তাকে আবারো প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিতে রাজি আছে।
মাদ্রিদের কোচ হিসেবে দুটি লিগ জিতেছেন, টানা তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অনন্য কীর্তিও গড়েছেন জিদান। এমন অর্জন এ যুগে খুব কম কোচেরই রয়েছে। এত এত অর্জনের পরও ক্লাব থেকে প্রাপ্য সম্মানটা পাননি বলে আক্ষেপ ছিল জিদানের। রিয়ালকে এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্লাবের পক্ষ থেকে তেমন কোন সাহায্য পাননি বলে খোলা চিঠিতে জানিয়েছিলেন জিদান।
অনুষ্ঠানে সদ্য বিদায়ী রামোসকে নিয়েও কথা বলেন পেরেজ। তিনি জানান, ‘আমরা চেয়েছিলাম আমাদের ক্লাবেই থাকুক। তাকে একটা চুক্তির প্রস্তাবও করা হয়েছিল, তবে সে ডেডলাইনের আগে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি। এই ক্লাব রামোসের ঘরবাড়ি। ও এই ক্লাবে আবারো ফিরবে, অন্য কোনো ভূমিকায়।’
প্রসঙ্গত, পেরেজের করা নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ বছরের অধীক বয়সী খেলোয়াড়দের সঙ্গে রিয়াল একবছরের বেশি চুক্তি করবেনা। লুকা মদ্রিচের ক্ষেত্রে এটা দুইবছর ধরে হয়ে আসছে। তবে রামোস চেয়েছিলেন দুইবছরের চুক্তি। শেষ পর্যন্ত বনিবনা না হওয়ায় ক্লাব ত্যাগ করেন রামোস।