ভারতের আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পাল্টে দিয়েছে চীন। এখনই পদক্ষেপ না করলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এই বিষয়ে দ্রুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার এ খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন। প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির প্রাণ ব্রহ্মপুত্র নদ। বিশেষ করে কৃষিনির্ভর অাসাম সেচের জন্য ওই নদের পানির উপর নির্ভরশীল। ফলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও দাপুটে কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য জুড়ে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে গগৈ জানান, “ব্রহ্মপুত্রের বুকে বিশাল বাঁধ বানিয়েছে চীন। তার মাধ্যমে পানির গতিপথ পাল্টে দিয়েছে তার। এর ফলে অাসামসহ একাধিক রাজ্যে প্রবল পানিসংকট দেখা দেবে। এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিন প্রধানমন্ত্রী, না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকেই এগোবে।”
চীনে ব্রহ্মপুত্রের নাম সাংপো। ওই নদের উৎস তিব্বতে। সেখান থেকে নিম্নমুখী হয়ে ভারত ও বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র। ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য, বিশেষ করে অাসামের জীবনরেখা ওই নদ। এর জন্যই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কৃষিকার্য সম্ভব হয়। তবে মাঝে মাঝে অতিবৃষ্টির জন্য দুইকূল ছাপিয়ে জনজীবন বিধ্বস্ত করে ব্রহ্মপুত্র।
খবরে আরও বলা হয়, তিব্বত থেকে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ বদলে ফেলার ভয়ানক ছক কষছে চীন। এই কাজের জন্য প্রায় ১ হাজার কিলোমিটারের একটি টানেল তৈরি করতে চলেছে বেইজিং। ওই সুড়ঙ্গের মাধ্যমে তিব্বত থেকেই ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ বদলে ওই নদকে জিনজিয়াং প্রদেশের দিকে প্রবাহিত করবে চীন। এমনটাই খবর ছিল ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। তবে বিষয়টি অজ্ঞাত কারণে ধামাচাপা পড়ে যায়। এবার গগৈর মন্তব্যে ফের শুরু হয়েছে জল্পনা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন ওই টানেল বানালে প্রবল বিপাকে পড়বে ভারত ও বাংলাদেশ। তিব্বত থেকে শুষ্ক জিনজিয়াং প্রদেশে পানি প্রবাহিত করলে কমে যাবে ব্রহ্মপুত্রের পানির স্তর। ফলে বিঘ্নিত হবে প্রবাহ। যার জেরে ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। পানি কমে যাওয়ায় কৃষিকার্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, সুড়ঙ্গ থেকে জল ছাড়লে প্লাবিত হতে পারে নিচু জায়গাগুলি। একই অবস্থা হবে বাংলাদশেও। ফলে চীনের এই চালে উদ্বেগ ছড়িয়েছে দিল্লির দরবারে।