ভারত জুড়ে দলিত সম্প্রদায়ের ডাকা ধর্মঘটে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯জনে। এছাড়াও আহত হয়েছে দুই শতাধিক। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের এক রায় নিয়ে দলিত সম্প্রদায়ের ধর্মঘটে ভারতের কয়েকটি রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা ভারত। দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
ভারতীয় প্রভাবশালী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবরে বলা হয়, এ বিক্ষোভে মধ্যপ্রদেশে একজন ছাত্র নেতাসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। রাজ্যের গোয়ালিয়রে বিক্ষোভকারীরা রেইললাইন অবরোধ করে এবং বেশ কিছু গাড়িতে অগ্নি-সংযোগ করে। রাজস্থানের আলওয়ারে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহতের খবর পাওয়া যায়। উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে একজন ও মিরুতে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাজ্যজুড়ে ৪০ পুলিশ সদস্যসহ ৭৫ জন আহত হয়েছেন।
পাঞ্জাব এবং ঝাড়খন্ডেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঞ্জাবে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সড়কের যান চলাচল বন্ধ আছে। ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাচিতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করেছে। গত ২০ মার্চ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এসসি/এসটি (নৃশংসতা প্রতিরোধ) আইনে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পরিবর্তনের আদেশ দেন। অতীতে এ আইনের অপব্যবহার হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত এ সংশোধনীর আদেশ করেন।
সংশোধিত আইনের অধীনে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করা এবং জামিনের বিধান সংযোজন করা হয়। এ আদেশকে কেন্দ্র করেই ধর্মঘটের ডাক দেয় দলিতরা। নিম্নবর্ণের মানুষদের সুরক্ষায় ১৯৮৯ সালে ভারতের পার্লামেন্টে এসসি/এসটি অ্যাক্ট পাস হয়। সম্প্রতি দলিত এবং উপজাতিদের সুরক্ষা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট এক আদেশে বলা হয়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না।
এদিকে, সংঘর্ষের নিন্দা জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীসহ বিভিন্ন রাজ্যের নেতারা। তারা আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আহ্বানও জানান।