নিজেদের স্বাধীনতার ৭০ বছর উদযাপন উপলক্ষে নিদাহাস ট্রফি ২০১৮ আয়োজন করে শ্রীলঙ্কা। শুরুটাও হয় দারুন। প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে দেয় তারা। কিন্তু এরপর ২১৪ রান করেও বাংলাদেশের কাছে পরাজিত হয়। ভারতের সাথে ২য় ম্যাচেও পরাজয়। তবুও আশা ছিল। বাংলাদেশের সাথে শেষ ম্যাচ জিতলে ফাইনালে খেলবে তারা। মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল তারা ফাইনালে খেলার ব্যাপারে। এমনকি ফাইনাল খেলার দিনের জন্য স্টেডিয়ামে গাড়ির যে পাস ছাপিয়েছিল সেখানে ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের কথা লিখে দিয়েছিল।
কিন্তু শুক্রবার টানটান উত্তেজনার ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভেঙে যায় শ্রীলঙ্কার। খেলার শেষ ওভারে উত্তেজনার পারদ এত চড়ে গিয়েছিল যে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতিই শুধু বাকি ছিল। কিন্তু এ পরাজয় যেন ভুলতেই পারছে না শ্রীলঙ্কার মানুষ ও মিডিয়া। টুইটারে, ফেসবুকে চলছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে বিষোদগার। সাধারণ মানুষ এর সমালোচনার পাশাপাশি দৃষ্টিকটু সমালোচনা চলছে শ্রীলঙ্কার মিডিয়াতেও!
সাকিব, রিয়াদ, সোহানসহ পুরো দলের সমালোচনা অব্যহত রয়েছে গত দুইদিন। শৃঙ্খলাপূর্ন টুর্নামেন্ট সাকিব এসেই বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে, খেলোয়াড়দের বেয়াদবি ক্রিকেটিয় চেতনা নষ্ট করে দিয়েছে নানা কথা লেখা হচ্ছে।
তবে তারা যে কোনভাবেই এ পরাজয় মানতে পারছে না তার প্রমান পাওয়া গেছে শ্রীলঙ্কার ইংরেজি দৈনিক দ্যা আইল্যান্ড এর “Bangladesh get away with slap on the wrist” শিরোনামের এক প্রতিবেদনে।
সেখানে বাংলাদেশ দলের সমালোচনার পাশাপাশি সমালোচনা করা হয়েছে আইসিসির সাবেক সভাপতি জগমোহন ডালমিয়ার। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা দেয়ার ব্যাপারে জোড়ালো ভুমিকা রাখেন এই ভারতীয় ক্রিকেট সংগঠক। আইসিসি সভাপতি হিসেবে তার ভূমিকার কারনেই প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার কিছুদিনের মধ্যেই খুব দ্রুত টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এ কারনে দ্যা আইল্যান্ড এর প্রতিবেদনে ডালমিয়ার সমালোচনা করে বলা হয়- Indian cricket supremo Jagmohan Dalmiya, the business tycoon from Calcutta, has done so much for the sport. He also had one or two faults. One of them was granting Bangladesh Test status. Mr. Dalmiya should be handed 1000 demerit points posthumously for awarding Bangladesh Test status.
অর্থাৎ “ভারতীয় ক্রিকেটের বড় কর্তা, কলকাতার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জগমোহন ডালমিয়া ক্রিকেটের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তিনি দু-একটি ভুলও করছেন। তার মধ্যে একটি ভুল হচ্ছে বাংলাদেশকে টেস্ট মর্যাদা দেওয়া।বাংলাদেশকে টেস্ট মর্যাদা দেওয়ার জন্য এখন ডালমিয়াকে মরণোত্তর ১০০০ ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া উচিত।”
বাংলাদেশকে টেস্ট মর্যাদা দেওয়ার জন্য আইসিসির সাবেক সভাপতি যিনি ৩ বছর আগে ইহলোক ত্যাগ করেছেন তাকে মরণোত্তর ১০০০ ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়ার কথা বলা থেকেই বুঝা যায় শ্রীলঙ্কার মিডিয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে বাংলাদেশের কাছের সেই পরাজয়!
তবে কি ভারতের পর শ্রীলঙ্কার সাথেও ক্রিকেটিয় শত্রুতা শুরু হল বাংলাদেশের? দীর্ঘদিনের ক্রিকেটিয় বন্ধুত্ব কি সমাপ্ত হয়ে গেল?